রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বাংলা দখলে মরিয়া বিজেপির পাখির চোখ একুশের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে পুরোদস্তুর বাঙালির দল হতে চাইছে গেরুয়া শিবির। নির্বাচনের আগে রাজ্যে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে এবার আধুনিক পশ্চিমবঙ্গের রূপকার ডা. বিধানচন্দ্র রায়কে (Bidhan Chandra Roy) হাতিয়ার করল বঙ্গ বিজেপি (BJP West Bengal)। বুধবার, ১ জুলাই স্বাধীনতার পর বাংলার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী বিধান রায়ের জন্ম ও মৃত্যুদিন পালনের অনুষ্ঠান করে নজর কাড়ল বিজেপি। যা এতদিন এ রাজ্যে প্রদেশ কংগ্রেসের একচ্ছত্র অধিকার ছিল, তাই এবার রীতিমতো ‘হাইজ্যাক’ করে নিল বঙ্গ বিজেপি।
এদিন মহা আড়ম্বরে বিজেপি কর্মীরা পালন করেন বিধান রায়ের জন্ম ও মৃত্যুদিন। মঙ্গলবারই দলীয় কর্মীদের এই দিন পালনের নির্দেশ দেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তিনি জানিয়েছে, ‘বাংলার সব মনীষীদের আমরা সম্মান জানাই। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি যখন বিধানসভায় বাংলাকে হিন্দুপ্রধান এলাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সেই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছিলেন বিধানচন্দ্র রায়। তিনি বাংলার রূপকার এটা প্রমাণ করেছেন। এছাড়া সবচেয়ে বড় বিষয় হল শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির মৃত্যু নিয়ে তদন্ত বিধান রায় চেয়েছিলেন। বিধানচন্দ্র রায় সত্যের পক্ষে ছিলেন।’ এরপরই কৌশলগত চাল দিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে প্রকৃত উন্নয়নের কারিগর তিনিই। সেই জন্য বিকাশ পুরুষকে সামনে রেখে আমরা এগোতে চাই। ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষ হলেও যাঁরা বিকাশ পুরুষ তাঁদের আমরা গ্রহণ করি। আর বাংলায় বিকাশ পুরুষের জলজ্যান্ত উদাহরণ বিধানচন্দ্র রায়।’
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের রূপকার বিধানচন্দ্র রায় একপ্রকার বাংলার আবেগ। ডান-বাম নির্বিশেষে রাজনীতির উর্ধ্বে রাজধর্মকে স্থান দিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সব দলের নেতাদের কাছেই ছিলেন নমস্য ব্যক্তি। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও বিধান রায়ের উন্নয়ন মডেল নিয়ে কোনওদিন প্রশ্ন ওঠেনি। এবার সেই আবেগকে কাজে লাগিয়েই এবার ভোট বৈতরণী পার করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। বাংলার বাঘ আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ও তাঁর ছেলে ভারত কেশরী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিধান রায়ের ঘনিষ্ঠতা সর্বজনবিদিত। তা নিয়ে প্রচারের রূপরেখা তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে বঙ্গ বিজেপির। তাই বিধানচন্দ্র রায় বিজেপির জন্য শুধু বাংলার বিকাশ পুরুষই নন, একুশের লক্ষ্যে বড়সড় নির্বাচনী হাতিয়ারও বটে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.