গৌতম ব্রহ্ম: সর্বধর্ম সমন্বয়ের মন্ত্র বাংলার রন্ধ্রে রন্ধ্রে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলার বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির বাতাবরণ। আর এই পরিস্থিতিতে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। বিধানসভায় সুরে সুরে সেই বার্তাই দিলেন বিজেপি (BJP) বিধায়ক অসীম সরকার। সর্বধর্ম সমন্বয়ে তাঁর সেই গান শুনে আপ্লুত বিধানসভার বিধায়করা। তৃণমূল (TMC) বিধায়করা তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে রসিকতাও করেন। তবে তাঁর এহেন কাজে অস্বস্তিতে বিজেপি।
”খ্রিস্ট-হিন্দু-মুসলমান/ সবার মাঝে একই প্রাণ/ মানুষ হয়ে মনুষ্যত্ব ভুলে যেও না/ মানুষের প্রাণে তুমি ব্যথা দিও না।” এই কথায় সুর বসিয়ে শুক্রবার বিধানসভার অধিবেশনে গাইলেন হরিণঘাটার (Haringhata) বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার। তা শুনে তৃণমূল বিধায়করা মশকরা করে তাঁকে বলেন, ”এ গান গাইলে আপনাকে দলে রাখবে না। আপনাকে কিন্তু বাদ দিয়ে দেবে।” তার উত্তরে বিজেপি বিধায়কের মন্তব্য, ”আমি ওসব মানি না। ভাবিও না।”
সমসাময়িক ইস্যুতে গান বেঁধে তিনি বহুবার বিতর্কের জড়িয়েছেন। এবার গান গেয়ে বিধানসভায় (Assembly) কার্যত তোলপাড় ফেললেন বিজেপির বিধায়ক অসীম সরকার। তাও আবার সর্বধর্ম সমন্বয়ের গান, সম্প্রীতির গান। তার জন্য যেমন হাততালি কুড়োলেন, তেমনই নানা মন্তব্যও শুনতে হল বিস্তর। কেউ বললেন, ”এই গান গাইলে তো আপনার দল আপনাকে বহিষ্কার করবে।” গান গাওয়ার আগে অবশ্য এমন টিপ্পনীর আশঙ্কা করে ভূমিকা করে রেখেছিলেন বিধায়ক। তিনি উত্তরে বলেন, ”জন্মের সময় কারও কোনও ধর্ম থাকে না। আমি মানব ধর্মে বিশ্বাসী।” এরপরই গান ধরেন, ‘মানুষের প্রাণে ব্যথা দিও না।’ CAA লাগুর পক্ষে সওয়াল করে তাঁর সাফ কথা, ”নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু না করলে ২০২৪এ বিজেপির হয়ে ভোট চাইতে পারব না।” এতে নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়ল বিজেপির।
সম্প্রতি বাংলার কোথাও কোথাও সাম্প্রদায়িক অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তা যাতে বেশি প্রভাব না ফেলে সেইমতো যথেষ্ট কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রীতি বজায় রাখতে বিধানসভার অন্দরে বিজেপি বিধায়কের গানে গানে বার্তা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.