মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টেই এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির স্বীকৃতি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার যে হাউজহোল্ড কনজাম্পশন এক্সপেন্ডিচার সার্ভে রিপোর্ট তথা গৃহস্থের ভোগব্যয় সম্পর্কিত সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে বাংলার গ্রামীণ পরিবারের চাল, ডাল কেনার বাইরে ভোগব্যয় দেশের অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে বেশি হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
গোটা দেশে এই বৃদ্ধির হার যেখানে সাড়ে ৩ শতাংশ, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে এই বৃদ্ধির হার ৫.৩৯ শতাংশ। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, কৃষকবন্ধু, বার্ধক্য ভাতা ইত্যাদি মমতার যেসব প্রকল্পে সরাসরি উপভোক্তাদের হাতে অর্থ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে তার সুফল হিসাবেই গ্রামীণ পরিবারগুলির ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে এবং গ্রামীণ পরিবারগুলির খাদ্যশস্যের বাইরে অন্যান্য পণ্য কেনার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সমীক্ষায় মেনে নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ও কন্যাশ্রীর মতো মমতার সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্প রাজ্যবাসীর জীবনে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এটা মেনে নিয়েছে দেশের সব রাজনৈতিক দল। তা প্রমাণিত হয়েছে একের পর এক রাজ্য এই প্রকল্পগুলিকে অনুসরণ করায়। এবার বাংলার সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পে সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের সিলমোহর পড়ল।
রিপোর্টে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে গ্রামীণ ভারতের ভোগ্যপণ্য ক্রয় বাড়তে শুরু করেছে। আর তা সম্ভব হয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পের সৌজন্যেই। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পগুলির অনুসরণেই বিভিন্ন রাজ্য গত এক-দেড় বছর ধরে জনমুখী পরিকল্পনা নিচ্ছে। সরকারি অনুদান প্রদানের প্রকল্পগুলির সৌজন্যে গরিব, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা চাল-ডালের পিছনে খরচ করেও কিছু টাকা অন্যান্য ভোগ্যপণ্য কেনার জন্য সাশ্রয় করতে পারছে। এর মধ্যে যেমন মাছ, মাংস, দুধ রয়েছে, তেমন টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে কম্পিউটারের মতো স্থায়ী ভোগ্যপণ্যও আছে। কেন্দ্রীয় সরকারের অন্য একটি সমীক্ষাই বলছে, মাংস, ডিম, দুধের মতো প্রাণীজ প্রোটিন উৎপাদন ও ভোগে দেশে শীর্ষে বাংলা। গ্রামীণ ভারতে বেড়েছে নানা ধরনের ভোগ্যপণ্যের ক্রয়-বিক্রয়।
মমতার কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প নিয়ে বিজেপি যতই টিপ্পনী কাটুক, তাদের ডবল ইঞ্জিন রাজ্যকেও অনুসরণ করতে হয়েছে মমতার পরিকল্পনাকে। লাডলি বহিনা যোজনা, মাহাতারি বন্ধন, লাডলি লক্ষ্মী, মাইয়া সম্মান যোজনা নামে মহিলাদের অনুদান প্রদানের প্রকল্প আনা হয়েছে মমতার লক্ষীর ভাণ্ডারকে অনুসরণ করে। গরিব রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকে শুরু করে ধনী রাজ্য মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, দিল্লি কেউ বাদ নেই এই তালিকায়। সকলেই মমতার দেখানো পথেই হাঁটছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি করা প্রকল্পের মাধ্যমেই গ্রামীণ মানুষের কাছে অতিরিক্ত অর্থ পৌঁছে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ অতিরিক্ত খরচ করতে সক্ষম হচ্ছেন। সরকারি প্রকল্পে সরাসরি উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নগদ অর্থ পৌঁছে যাচ্ছে বলে বাজারে বাড়ছে টাকার জোগানও। বৃদ্ধি পাচ্ছে পণ্য-চাহিদা। উৎপাদন ক্ষেত্রও চাঙ্গা হচ্ছে।
মাথাপিছু ভোগব্যয়ের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, দেশে এক বছরে মাথাপিছু গড় ক্রয়ক্ষমতা ৩ হাজার ৮৬০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ২৪৭ টাকা। শহর এলাকায় এটা বেড়েছে ১.১৭ শতাংশ। গ্রামাঞ্চলে বেড়েছে সাড়ে ৩ শতাংশ। এই বৃদ্ধির হার পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ৫.৩৯ শতাংশ। ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল কমিশন মনে করছে এটা সম্ভব হচ্ছে জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির জন্যই। হাতে নগদের জোগান বাড়ানো এক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী হয়েছে। আর এবিষয়ে দেশে চ্যাম্পিয়ন প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। গোটা দেশকে পথ দেখাচ্ছে তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.