সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিংড়িঘাটায় দুর্ঘটনার জের। লালবাজারের নির্দেশে সরিয়ে দেওয়া হল বেলেঘাটা ট্রাফিক গার্ডের ওসিকে। পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া ওসির নাম পঙ্কজ ঘটক। অভিযোগ, পথদুর্ঘটনার খবরের বিশদ রিপোর্ট লালবাজারকে দিতে সময় নিয়েছিলেন ওই ওসি। এমনকী দুর্ঘটনাস্থল থেকে দেহ দু’টি সরিয়ে নিতেও গড়িমসি করেন তিনি। এহেন অভিযোগের পরই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল লালবাজার।
উল্লেখ্য, চিংড়িঘাটার সংশ্লিষ্ট এলাকা বিধাননগর কমিশনারেটের অধীনে পড়ে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বেই বেলেঘাটা ট্রাফিক গার্ড। ঘটনাস্থলের কাছে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি সিভিক ভলানটিয়ারও ছিলেন তিনজন। তারপরেও লাল সিগনাল উপেক্ষা করে কী করে সরকারি বাস চলে গেল তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছে। দুর্ঘটনাস্থল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বাইপাসে গাড়ির ভিড় সবসময় লেগে আছে। অথচ সেই গাড়ি ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করে লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের পারাপারের বন্দোবস্ত অত্যন্ত দুর্বল। এদিকে সামান্য জল কিনতে হলেও ওই ব্যস্ত মোড় পেরিয়ে বাসিন্দাদের যেতে হয় বেলেঘাটাতেই। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে হলেও সেই বেলেঘাটাই ভরসা। এমন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পথচারীর পারাপারের জন্য মাত্র ৩০ সেকেন্ড গাড়ির গতি থামে। ওই সময়ের মধ্যেই উলটোডাঙা থেকে গাড়ি, সল্টলেক থেকে গাড়ি সবই একদিক থেকে আর একদিকে যায়। এই গাড়ির ভিড়ের মধ্যে দিয়েই বাসিন্দাদের পারাপার করতে হয়। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন উঠতেই ক্ষোভ উগরে দেয় বাসিন্দারা। পালটা প্রশ্ন ছুটে আসে ভিড়ের মধ্যে থেকে। ট্রাফিক পুলিশ গাড়ির চালকদের থেকে টাকা তুলবে নাকি যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে। যদিও ট্রাফিকগার্ডের তরফ থেকে এই অভিযোগ মানা হয়নি। উলটে দাবি, সিসিটিভি রয়েছে চিংড়িঘাটা মোড়ে। বেলেঘাটা ট্রাফিক গার্ডের অফিসে বসে মোড়ের ট্রাফিকের ছবি দেখা যায়। এমন কোনও ঘটনা কখনও ঘটেনি।
এদিকে গত শনিবার বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দুই কলেজ ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে চিংড়িঘাটা ও সংলগ্ন এলাকা। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা সরকারি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টিও চলে। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিও চালায় পুলিশ। আশপাশের এলাকায়ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গোটা ঘটনায় ট্রাফিকের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিভিন্ন মহল। বিকেলে নবান্ন থেকে মৃতের পরিবারকে দুই লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা হয়। যানজট কমাতে শহরে নতুন দুটি উড়ালপুল তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই দিনই। বিতর্ক এড়াতে ঘটানাস্থল পরিদর্শনে যান পুলিশের বড়কর্তারা। ট্রাফিক ব্যবস্থাও খতিয়ে দেখা হয়। তখনও পর্যন্ত ট্রাফিকগার্ডের ওসির বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেয়নি লালবাজার। তবে দুর্ঘটনার পরে সপ্তাহ ঘোরার আগেই লালবাজারের তরফে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হল। এই সিদ্ধান্তের জেরেই ট্রাফিক গার্ডের ওসির পদ থেকে সরছেন পঙ্কজ ঘটক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.