গৌতম ব্রহ্ম: করোনার আতঙ্কে জেরবার সকলে। অহোরাত্র ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে চলেছেন বহু মানুষ। আর তা করতে গিয়ে দুুর্ভাগ বাড়ছে তাদের। বিদেশ থেকে ফিরলেই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন কিনা তা জানতে লম্বা লাইন পড়ছে বেলেঘাটা আইডিতে। সেখান থেকেই পরীক্ষা দিয়ে মিলছে ফিট সার্টিফিকেট (Fit Certificate)। ফলে লাইনে দাড়াতে গিয়ে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের।
করোনা আতঙ্ক শুরু হওয়ার পর থেকেই বেলেঘাটা আইডিকে বাংলার প্রথম আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে সামান্য করোনার উপসর্গ দেখা দিলেই হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। আজ এখানে লাইনে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা করাতে গিয়ে দুর্ভোদগের সামিল হন বহু মানুষ। থিকথিকে ভিড় ভরসন্ধেতেও। এই লাইন শুরু হয় এমারজেন্সির সামনে থেকে শেষ হয় বাইরের বড় রাস্তায়। একে একে সবাই চায় চিকিৎসককে দিয়ে পরীক্ষা করাতে। প্রয়োজনে সোয়াব টেস্ট করাতেও পিছপা নন তারা। ফলে মামুলি সর্দি-জ্বরের উপসর্গ দেখলেও তারা ততখনাৎ হাজির হচ্ছেন বেলেঘাটা আইডিতে। করোনা আক্রান্ত না হলেও সামান্য হাঁচি কাশি হলেও কোনও ব্যক্তিকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে অফিসে বা অন্য কোথাও জমা দিতে হচ্ছে ফিট সার্টিফিকেট। তবেই তাঁর আবার জনজীবনে প্রবেশের অনুমতি মিলছে। প্রতিদিন সকাল থেকে চেকআপের পর ফিট সার্টিফিকেট পাওয়ার আশায় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছেন অনেকে। আর প্রতিদিন এত মানুষের পরীক্ষা করা ও তাদের ফিট সার্টিফিকেট দেওয়ার বিষয়টি সামলাচ্ছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। বেলেঘাটার এই পরিস্থিতি সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকেও। এদিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে করাতে আসা মানুষদের সঙ্গে দুপুরে একপ্রস্থ ধ্বস্তাধ্বস্তি হয় পুলিশের। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। অন্যদিকে বেলেঘাটার এই সেন্টার একটি পোস্টার টাঙানো হয়েছে। তাতে লেখা, যারা করোনা আক্রান্তের সংস্পর্ষে এসেছেন তারাই কেবলমাত্র পরীক্ষার জন্য লাইনে দাঁড়াবেন। এই পোস্টারে আরও বেশি বিভ্রান্তি ছড়ায় মানুষের মধ্যে। কারোর বক্তব্য,”আমরা করোনা আক্রান্ত সংস্পর্ষে এসেছি কিনা তা বুঝব কি করে?” তাই কারোর জ্বর থাকুক বা না থাকুক পরীক্ষা করাতে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন সকলেই।
তবে কেবলংমাত্র লাইনে দাড়িয়েই হয়রান হচ্ছেন না মানুষ। কারোর অভিযোগ হাসপাতালের সুপার প্রায়ই এসে ধমক দিচ্ছে যাচ্ছেন অনেককে। এই লাইনে যারা মাস্ক পরে দাঁড়াচ্ছেন না তারা ও সুপারের রোষের শিকার হচ্ছেন। আজ বেলেঘাটা আইডিতে সন্ধে ৬ টা পর্যন্ত প্রায় শতাধিক মানুষ দাড়িয়ে ছিলেন এই ফিট সার্টিফিকেটের আশায়। আরা তাদের চাপে নাস্তানাবুদ হচ্ছেন চিকিৎসক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.