দীপালি সেন: পুষ্টি জোগানে স্কুলে পড়ুয়াদের খাওয়ানো হয় রান্না করা মিড-ডে মিল। কিন্তু, অনেক সময় স্কুলে বসে না খেয়ে পড়ুয়ারা প্যাকেটবন্দি করে বাড়ি নিয়ে যায় সেই খাবার। বিশেষত শহরাঞ্চলের স্কুলগুলিতে। ব্যতিক্রম নয় কলকাতা পুরসভার ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত বেহালা গার্লস হাইস্কুলের প্রাথমিক বিভাগও। গলদ সেখানেই। পরিবেশের উপর প্লাস্টিক ব্যবহারের কুপ্রভাব নিয়ে অবিরাম সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা সত্ত্বেও পড়ুয়ারা নিয়ে আসে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ। মিড-ডে মিলের গরম খাবার ভরে নিয়ে যায় তাতে। তাই পড়ুয়াদের অভ্যাসের বদল ঘটিয়ে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করে সচেতনতা গড়ে তুলতে অভিনব উদ্যোগ নিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।
প্রাথমিক বিভাগের পাঁচ শতাধিক পড়ুয়ার হাতে তুলে দেওয়া হল চটের এই ব্যাগ। এবং মিড-ডে মিল নিয়ে যেতে সেই চটের ব্যাগ আনা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বেহালা থানার পাশের অবস্থিত স্কুল বেহালা গার্লস হাইস্কুল সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত। গত বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে সরস্বতী পুজো উপলক্ষে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। সেদিনই দেওয়া হয় একটি করে চটের তৈরি মোটা ব্যাগ। তার একদিকে ইংরেজিতে লেখা, স্কুলের নাম ও মিড-ডে মিলের ব্যাগ এবং অন্যদিকে লেখা ‘সে নো টু প্লাস্টিক’।
স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের জানিয়ে দেন, এবার থেকে মিড-ডে মিল নিয়ে যেতে হলে এই ব্যাগই স্কুলে আনতে হবে। কোনও মতেই প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ স্কুলে আনা যাবে না। হাই স্কুলের প্রাথমিক বিভাগের পরিচালন সমিতির সভাপতি রতন চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বিশ্ব উষ্ণায়ন ও প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে মানুষকে সচেতন করেছেন। সেই পাঠ ছোটদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই এই উদ্যোগ। বসে খাওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও বেশির ছাত্র-ছাত্রীই বাড়িতে খাবার নিয়ে যেতে আগ্রহী হয়। গরম খাবার প্লাস্টিকে ভরে নিয়ে যায় সবাই। সেটা আমরা বন্ধ করতে চাই। তাই চটের ব্যাগ দেওয়া হয়েছে।’’
রতনবাবু জানিয়েছেন, স্কুলে ৩০০টি থালা এবং ১৫০টি গ্লাস রয়েছে। তা সত্ত্বেও স্কুলের অধিকাংশ পড়ুয়াই খাবার বাড়ি নিয়ে যেতে চায়। প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভরে নিয়ে যাওয়ার সময় অনেক সময় তা ছিঁড়ে খাবার মাটিতে পড়েও যায়। চটের ব্যাগ ব্যবহারে এই ধরনের ঘটনাও প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন রতনবাবু। স্কুলের পাঠ্যবইতে থাকলেও প্লাস্টিক ব্যবহারে অতটা সচেতন নয় ছাত্র-ছাত্রীরা। স্কুলের টিচার ইনচার্জ মলয় চৌধুরীর কথায়, “পাঠ্যবইতে পরিবেশ সচেতনতার নানা বিষয় আমরা পড়াই। স্কুলেও নিয়মিত প্রার্থনার সময় এটা নিয়ে বলা হয়। দেওয়ালে পোস্টারও রয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.