ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: চিনা সুন্দরীদের সঙ্গলাভের টোপ। চিনে (China) গিয়ে যদি সেখানকার সুন্দরীদের সঙ্গ পাওয়া সহজ না হয়, তবে ভারচুয়ালি তাঁদের হাজির করা হবে মোবাইলের স্ক্রিনে। তারপর তাঁদের সঙ্গে ভিডিও চ্যাট করা শুধু সময়ের অপেক্ষা। শুধু একটি ক্লিক করে ‘চিনা যৌনতা গ্রুপ’-এ যোগ দিলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে আনন্দের কাল্পনিক বিশ্বে। কিন্তু এখানেই বিপদ দেখছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের মতে, এভাবেই অনলাইনে সাইবার জালিয়াতির ফাঁদ পেতেছে চিনা জালিয়াতরা।
এর আগেও একটু অন্য পদ্ধতিতে লোন অ্যাপের জাল বিছিয়ে সারা দেশ থেকে কোটি টাকা জালিয়াতি করেছে চিনা জালিয়াতরা। তাতে সঙ্গে নিয়েছে নেপাল ও এই দেশের কিছু জালিয়াতকে। গোয়েন্দাদের ধারণা, লোন অ্যাপের আদলে চিনা সুন্দরীদের টোপ দিয়ে ব্ল্যাকমেল করেই টাকা আদায়ের ছক কষছে চিনা জালিয়াতরা। লালবাজারের এক আধিকারিক জানান, এর আগে চিনা লোপ অ্যাপের ফাঁদে পা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন কলকাতার বহু মানুষ। এই ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ায় সতর্ক করা হয়েছিল। এবার চিনারা নতুনভাবে ফাঁদ পাতলেও শহরবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে লালবাজার। পুলিশ আধিকারিকদের মতে, এই ধরনের কোনও চিনা সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপে যোগ না দিলেই অনায়াসে এড়িয়ে চলা যাবে এই ধরনের জালিয়াতি।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, টেলিগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়াকে এবার হাতিয়ার করছে চিনা জালিয়াতরা। তারা কলকাতা-সহ দেশের বহু মানুষকে গ্রুপে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। গ্রুপে চিনা ভাষায় মেসেজ পাঠানো হলেও মূল আকর্ষণ চিনা সুন্দরীদের ছবি। ওই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসেজে জানতে চাওয়া হচ্ছে, কোন সুন্দরী গ্রাহকের পছন্দ। সেইমতো চিনের মোবাইল নম্বরও দেওয়া রয়েছে। চিনের বিভিন্ন জায়গার ঠিকানা বলা আছে। তার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য হচ্ছে চিনের মালু শহর, যা সাংহাইয়ের চিয়াতিং জেলায় অবস্থিত। মালুর ইয়েচেং রোডে একটি ঠিকানাও রয়েছে মেসেজে।
এদিকে আবার বলা হয়েছে, চিনের অন্যান্য শহরের আস্তানায় দুপুর বারোটা থেকে রাত দু’টো পর্যন্ত চিনা সুন্দরীদের সঙ্গে সময় কাটানো যাবে। প্রয়োজন হলে ওই গ্রুপ থেকে গাড়ির ব্যবস্থাও করা হবে। যদিও গোয়েন্দাদের মতে, ওই চিনা গ্রুপ যারা তৈরি করেছে, তারাও জানে যে এই দেশের কেউই চিনা সুন্দরীদের সঙ্গ লাভের জন্য চিনে যাবেন না। কিন্তু তাঁরা গ্রুপে যোগ দিয়ে চিনা সুন্দরীদের আরও ছবি দেখতে পারেন। এমনকী, গ্রুপে যোগ দিলে চিনের যুবতীদের সঙ্গে ভিডিও চ্যাট করাও সম্ভব।
এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন গোয়েন্দারা। কারণ, এর আগেও দেখা গিয়েছে যে, লোন অ্যাপে টাকা নেওয়ার পর তা ফেরত দিয়েও বিপদে পড়েছেন বহু শহরবাসী। তাঁদের কাছে আরও টাকা চেয়ে শুরু হয়েছে ব্ল্যাকমেল। সাধারণত গ্রুপে যোগদানের আগেই গ্রাহকের সোশ্যাল মিডিয়া ও মোবাইল সংক্রান্ত বহু তথ্য নিয়ে নেয় জালিয়াতরা। সেই সূত্র ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি আপলোড করে ব্ল্যাকমেলের হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করতে থাকে তারা। এই যৌনতা গ্রুপের মাধ্যমে এই ধরনের ব্ল্যাকমেল অনেক বেশি সহজ হয়ে যায় জালিয়াতদের পক্ষে। তার উপর কেউ চিনা সুন্দরীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময়ের ভিডিও চ্যাট করলে সেই ভিডিও ক্যাপচার করেও ব্ল্যাকমেল করা সহজ হয়ে যেতে পারে। কেউ যাতে জালিয়াতদের ফাঁদে না পড়েন, তাই তাঁকে সতর্ক থাকারই পরামর্শ দিচ্ছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.