কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: প্রতারকদের থেকে মানুষকে বাঁচাতে ফেসবুক (Facebook) লাইভকে মাধ্যমে লাগাতার প্রচার শুরু করল বিধাননগর পুলিশ। প্রায় প্রতিদিনই সমাধান করে ফেলা গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলি জনসাধারণের কাছে তুলে ধরতে লাইভ বা ডেফার্ড লাইভ অনুষ্ঠান করবে বিধাননগর কমিশনারেট (Bidhannagar City Police)। পুলিশের ফেসবুক পেজে গিয়ে তা যে কেউ দেখতে পারবেন। সম্প্রতি নতুন ধরনের একটা প্রতারণার ঘটনার পর্দাফাঁস করেছে লেকটাউন থানা। এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ ফেসবুক লাইভে তুলে ধরেছেন ওই থানার ইন্সপেক্টর ইন-চার্জ নন্দদুলাল ঘোষ।
বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমার জানিয়েছেন, “প্রতারণার হাত থেকে বাঁচার জন্য মানুষকে সচেতন করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফেসবুকের মাধ্যমে থানার পুলিশ আধিকারিকের কাছ থেকে মূল্যবান পরামর্শ নিয়মিত পাবেন নাগরিকরা”। কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে মানুষকে বোকা বানিয়ে টাকা তছরুপের ঘটনা প্রায়শই সামনে আসছে। দ্রুত সেগুলোর সমাধান হচ্ছে বটে তবে মানুষ যদি আরেকটু সচেতন হন, ছোটখাট ভুল যদি না করেন, তাহলে এই প্রতারণার ঘটনাগুলি আটকানো অনেক সহজ হয়ে যাবে। যে ঘটনাগুলি সম্প্রতি ঘটেছে তার মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং নতুন একটি মামলা সম্প্রতি হয়েছে লেকটাউন থানাতে।
এই মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ জালিয়াতদের একটি নয়া চক্রের সন্ধ্যা পায়। সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলে অভিনব কায়দায় মোটা টাকা হাতানো শুরু করেছে একটা চক্র। তারা প্রথমে কোন ব্যক্তিকে হোয়াটসঅ্যাপে অ্যাড করে নেয়। নিজেদের সেই ব্যক্তির আত্মীয় পরিচয় দেয়। এবং সেই ব্যক্তির আত্মীয়ের ছবি কোথাও থেকে জোগাড় করে নিজের হোয়াটসঅ্যাপের ডিপিতে লাগিয়ে নেয়। যাতে যাঁকে মেসেজ করা হচ্ছে তিনি যেন ভাবেন তার আত্মীয়ের সঙ্গেই চ্যাট করছেন। দিনকয়েক কথা চালাচালির পর কোনও একটা অজুহাতে টাকা চেয়ে বসে আত্মীয়ের ভেকধারী ওই প্রতারক। লেকটাউনের ঘটনায় বিদেশে থাকা এক আত্মীয়ের শরীর খারাপের অজুহাত দেখানো হয়েছিল। সেই ঘটনায় ৮ লক্ষ টাকা অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দিয়েছিলেন অংকুর গর্গ নামে এক ব্যক্তি।
সেই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তারপর ঘটনাটির বিবরণ ফেসবুকে লাইভ করেছে কমিশনারেট। আরেকটি ঘটনা সম্প্রতি সাইবার থানাতে হয়। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের তরফে মামলাটি করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় দেখা গিয়েছে, খড়দার সমীরণ সাহা নামে এক ব্যক্তি ব্যাংকে থেকে এক গ্রাহকের নথি হাতিয়ে নিয়ে সেই ব্যক্তির পরিচয় দিয়ে ব্যাংকে ফোন করে লিংক মোবাইল নম্বর এবং ই-মেল আইডি বদলে নিয়েছিল। টাকা তছরূপ করেছিল প্রায় তিন কোটি। এই ঘটনাটিরও রহস্য উদঘাটন করেছে সাইবার থানা। এরকম বহু ঘটনা সমাধানের পর জনগণের কাছে তুলে ধরবে যা তদন্তকারীদের মুখ থেকে নিয়মিত জানতে পারবেন নাগরিকরা। সচেতনতা বাড়াতে পুলিশের অভিনব এই উদ্যোগ কাজে আসবে বলে আশাবাদী কমিশনারেট। প্রায় প্রতিদিন একটি বা একাধিক ঘটনা তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনারেটের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.