ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ও গোবিন্দ রায়: বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কট ইস্যুতে সোমবারও সরগরম রইল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। একদিকে আদালত চত্বরে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ছুটে ‘তদন্ত’ চালিয়ে গেলেন বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিরা। অন্যদিকে, আইনজীবীদের মিছিল, পালটা মিছিল চলল হাই কোর্টে। এদিকে বিচারপতির এজলাস বয়কট ও পোস্টার বিতর্ক নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বললেন, “আমরাও খুঁজে বেড়াচ্ছি, পোস্টার কারা দিয়েছে। বিজেপির কেউ এই পোস্টার মেরেছেন কিনা সেটাও দেখতে হবে।”
গত সোমবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছিল হাই কোর্ট চত্বর ও তাঁর পাড়ায়। এমনকী, তাঁর এজলাস বয়কট করেছিলেন আইনজীবীদের একাংশ। অন্য আইনজীবীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। চলে বিক্ষোভও। পালটা বয়কটপন্থীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিচারপতি। আইনজীবীদের ব্যবহারে ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতিও। এরপর একসপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এই পরিস্থিতি নিয়ে এখনও সরগরম কলকাতা হাই কোর্ট। কারা পোস্টার সাঁটিয়েছিল, কারা এজলাস বয়কট করেছিল তা খতিয়ে দেখতে কলকাতায় এসেছেন বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিরা। এদিন দিনভর হাই কোর্ট চত্বরে তদন্ত প্রক্রিয়া চালিয়ে গেলেন তাঁরা।
দিনভর কলকাতা হাই কোর্টের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ছোটাছুটি করলেন বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিরা। বৈঠক করেন হাই কোর্টের বার কাউন্সিলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। উচ্চ আদালতের রেজিস্ট্রার জেনারেল, ডেপুটি সলিসিটার জেনারেলের সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা। তবে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল, অ্যাসিসট্যান্ট সলিসিটার জেনারেল মামলার কাজে ব্য়স্ত থাকায় তাঁদের সঙ্গে দেখা হয়নি। বেশকিছু আইনজীবীকে ফোন করেছে এই প্রতিনিধিদল। আইনজীবীদের বয়ান নথিবদ্ধ করতে চায় প্রতিনিধি দল। বিক্ষোভের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষিত ছিল হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে। সূত্রের খবর, সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখে প্রতিনিধি দল।
এদিকে আইনজীবীদের মিছিল, পালটা মিছিল চলে হাই কোর্ট চত্বরে। তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা মিছিল করেন। তাঁদের দাবি, আন্দোলন গণতান্ত্রিক অধিকার। এর জন্য আইনজীবীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্য়বস্থা নেওয়া উচিত নয়। পালটা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবিতে সুর চড়িয়ে কালো ব্যাজ পরে মিছিল করেন বিজেপি, কংগ্রেস ও বামপন্থী আইনজীবীরা। উল্লেখ্য, আজও মান্থার এজলাসে কোনো সরকারি আইনজীবী মামলায় অংশ নেয়নি। সবমিলিয়ে এদিনও মান্থার এজলাস বয়কট-বিক্ষোভ নিয়ে শোরগোল চলল হাই কোর্টে।
এদিকে জাতীয় বার কাউন্সিলের দলের তদন্ত নিয়ে কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, “গোটাটাই সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক পরিকল্পনা। সবেতেই টিম পাঠানো হচ্ছে।” কারা পোস্টার সাঁটালো? এ প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, “আমরাও খুঁজে বেড়াচ্ছি পোস্টার কারা দিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। বিজেপির কেউ তৃণমূলের সাথে দূরত্ব বাড়াতে এই পোস্টার মেরেছেন কি না সেটাও দেখতে হবে। তবে এটাও তদন্ত করা উচিত যে শুভেন্দু অধিকারীর অবচেতন মানে বারবার কেন রাজাশেখর মান্থার নাম আসে?” শেষে তাঁর আরও সংযোজন, “আমাদের আস্থা আছে আদালতের উপর। কিন্তু মাঝেমাঝে ঠোকাঠুকি লাগে৷। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ক্ষোভ কেন সেটাও দেখা উচিত। তোতাপাখি পাঠালে তাদের ব্যাপার।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.