ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের মুকুটে আরও একটি সাফল্যের পালক। দেশে কোভিড (COVID) ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অন্যতম অংশীদার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্যদপ্তর। সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য নিয়ামক সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় ডিসেম্বরে রাজ্যে শুরু হছে করোনা নিয়ন্ত্রণে বিসিজি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল।
স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে এই ট্রায়ালের অন্যতম অংশীদার কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন। বিসিজি ভ্যাকসিন দিয়ে এমন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর ছাড়াও রয়েছে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স(এইমস)এবং লখনউয়ের সঞ্জয় গান্ধী পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট। দিল্লি এবং লখনউয়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হলেও দুর্গাপুজো ও কিছু কারিগরি কাজের জন্য কলকাতায় কাজ শুরু হয়নি। তবে ডিসেম্বরে ট্রায়াল শুরুর জন্য স্বাস্থ্যভবনে প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। প্রকল্পের অধিকর্তা দিল্লি এইমসের মেডিসিনের অধ্যাপক ডাঃ সঞ্জীব সিনহা। রাজ্যের ট্রায়ালে যুক্ত পাঁচ সদস্যের এক বিশেষজ্ঞদল। স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে এই প্রকল্পের সাফল্য কামনা করে স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রধান সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেছেন, “দিল্লি ও লখনউতে কাজ শুরু হয়েছে। ভিনরাজ্য থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে ডিসেম্বরে ট্রায়াল শুরু হবে।”
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, বিসিজি ভ্যাকসিন গ্রহীতার তালিকাও খতিয়ে দেখা হয়েছে। জটিল রোগ যেমন ডায়াবেটিস, সিওপিডি বা ‘হাই রিস্ক’ গ্রুপে থাকা ব্যক্তিদের বাছাই করা হয়েছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নিয়ম মেনে আইসিএমআরকে ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের নামের তালিকাও পাঠানো হয়েছে। তবে ট্রায়াল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নিয়ম মেনে একদলকে বিসিজি (ব্যাসিলাস কালমেট গুইরিন) ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। আবার সমসংখ্যক গ্রহীতা ‘প্লাসিবো’ বা বিসিজি ভ্যাকসিন পাবেন না। স্বাস্থ্যদপ্তরের এক কর্তার কথায়, ভ্যাকসিন প্রকল্প গ্রহণের তিন, ছয় ও নয় মাসের মধ্যে দেখা হবে করোনা ভাইরাস দুই দলের উপর কেমন প্রভাব ফেলে। ট্রায়ালের সঙ্গে জড়িত এক আধিকারিকের কথায়, বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, বিসিজি ভ্যাকসিন গ্রহীতার প্রায় ৫০ ভাগ সুস্থ থাকে। তাই যাচাই করে দেখা হবে। বস্তুত, করোনা নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের অবস্থানের প্রশংসার পর আইসিএমআর সরাসরি এই ট্রায়ালে অংশ নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে প্রস্তাব দেয়। তারপরই এই কাজ শুরু হয়েছে। কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় তিন পর্যায়ে বিসিজি কোভিড প্রতিরোধী ট্রায়াল হবে বলে সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, রাজ্যে বিসিজির কোভিড ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল নতুন নয়। এর আগে আইসিএমআরের সংস্থা নাইসেড একটি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এমন ট্রায়াল করেছিল। তবে সরাসরি রাজ্য সরকারের সঙ্গে এমন ট্রায়াল পূর্বাঞ্চলে এই প্রথম। তাই ট্রায়াল ঘিরে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে আগ্রহ তুঙ্গে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.