Advertisement
Advertisement

Breaking News

বারাসতে খুদে পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে গ্রেপ্তার প্রিন্সিপাল ও ক্লাস টিচার

তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Barasat school principal, teacher held over student’s death

ছবিতে শিশু অর্কাভ।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:September 8, 2018 6:13 pm
  • Updated:September 8, 2018 6:13 pm  

ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: অবশেষে বারাসতে স্কুলের গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করল প্রশাসন। স্কুলের প্রিন্সিপাল কেয়া দত্ত ও ক্লাস টিচার শতপূর্ণা মিস্ত্রিকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। শিক্ষক দিবসে স্কুলের পাশের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু অর্কাভ সাহার দেহ। স্কুলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করে অর্কাভর পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার প্রিন্সিপাল ও ক্লাস টিচার। এদিন তাঁদের আদালতে পেশ করেছে পুলিশ।

বর্তমানে এ ধরনের স্কুলের রমরমা গোটা রাজ্যজুড়ে। রীতিমতো বিজ্ঞাপন দিয়ে স্কুলগুলিতে ভরতি চলছে। তা সত্ত্বেও এধরনের বেসরকারি স্কুলে গাফিলতির ভুরি ভুরি ঘটনা সামনে এসেছে। কয়েকদিন আগেই জিডি বিড়লার ঘটনায় রাজ্য তোলপাড় হয়েছিল। তারপরও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে উদ্বেগ বাড়ছে অভিভাবক মহলে। তাহলে কি নামী স্কুলেও নিরাপদ নয় আপনার বাচ্চা?  বাচ্চার নিরাপত্তার জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করলেও কি মিলবে না বাচ্চার কোনও নিরাপত্তার গ্যারান্টি?  প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকরা। কিন্তু এর আগে স্কুলের গাফিলতির ঘটনা সামনে আসলেও কোনও স্কুলের প্রিন্সিপালকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই ঘটনায় বেসরকারি স্কুলগুলির ঢিলেঢালা মনোভাব নিয়ে প্রশাসনও একটি বার্তা দিতে চাইছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল।

Advertisement

[ফুটপাতবাসী তরুণীকে খাবারের লোভ দেখিয়ে গণধর্ষণ, শহরে চাঞ্চল্য]

আর পাঁচটা অভিভাবকের মতো সন্তানকে বড় করতে ‘বিশেষভাবে’ দক্ষ স্কুলের উপর ভরসা করেছিলেন অর্কাভর মা-বাবা। কিন্তু সেই স্কুল কর্তৃপক্ষেরই চরম গাফিলতিতে ওঁদের কোল খালি হয়ে গেল। স্কুলে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান শেষে মা এসে দেখেন, ছেলে কোথাও নেই! বহু খোঁজ করে শেষমেশ স্কুলের পাশে এক পুকুর থেকে উদ্ধার হল ছ’বছরের একরত্তির দেহ। শুক্রবার মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে। শিক্ষক ও নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে অর্কাভ কীভাবে পুকুর পর্যন্ত গেল,  ভেবে পাচ্ছেন না কেউ। অভিভাবকদের অনেকের অভিযোগ,  বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানদের ঠিকঠাক বড় করার তাগিদে তাঁরা প্রচুর টাকা দিয়ে ওই স্কুলে ভরতি করেছেন। অথচ সেখানে যে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার হাল একান্তই ঠুনকো,  এদিনের ঘটনায় তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। উদ্দীপন অ্যাকাডেমি নামে স্কুলটির কর্তৃপক্ষ কবুল করে নিচ্ছে যে,  গাফিলতি হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কেয়া দত্ত বলেন,  “আমরা বুঝতে পারিনি,  এমন কিছু ঘটে যাবে।” 

অর্কাভর বাড়ি বারাসতের চড়কডাঙায়। বাবা অনীশ সাহার ছাপাখানা রয়েছে। পুলিশসূত্রের খবর,  মা মিতাদেবী বেশিরভাগ দিন ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতেন। একেবারে ছুটির পর ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরতেন। কিন্তু সেদিন তিনি অর্কাভকে স্কুলে দিয়ে ছাপাখানায় চলে গিয়েছিলেন। স্কুলে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান ছিল। নির্ধারিত সময়ে ছেলেকে নিতে এসে মিতাদেবী কোথাও তাকে খুঁজে পাননি। শিক্ষিকা থেকে দারোয়ান কেউই অর্কাভর হদিশ দিতে পারেননি। সন্ধান না পেয়ে স্কুলের বাইরে শুরু হয় তল্লাশি। স্কুলের কয়েকশো মিটার দূরে একটি পুকুরের জলও তোলপাড় করে ফেলা হয়। আর সেখানেই পাওয়া যায় অর্কাভর নিথর দেহ। ঘটনার আকস্মিকতায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন সকলে। শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা তল্লাটে।

ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের প্রশ্ন,  “মাসে মাসে এত টাকা নেওয়া হচ্ছে! কিন্তু বিনিময়ে?  একটা বাচ্চা বেমালুম বেরিয়ে গেল, স্কুলের কেউ খেয়ালও করল না!” তাঁদের আক্ষেপ, স্কুল কর্তৃপক্ষ একটু সজাগ থাকলে এই ট্র‌্যাজেডি এড়ানো যেত। 

[লাগামহীন জ্বালানির মূল্য, শনিবারও দাম বাড়ল পেট্রল-ডিজেলের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement