অর্ণব আইচ: ট্রলিতে ভর্তি বাংলাদেশের সাংসদের (Bangladesh MP) হলুদমাখা দেহের টুকরো হস্তান্তর হয়েছিল নিউ টাউনের একটি পাবলিক টয়লেটে। খুনের (Murder) মুল অভিযুক্ত বাংলাদেশের কুখ্যাত সুপারি কিলার আমানুল্লাহ ওই পাবলিক টয়লেটেই তার সঙ্গী জিহাদ হাওলাদারের হাতে তুলে দিয়েছিল ওই ট্রলি। সোমবার জিহাদকে সঙ্গে নিয়েই ওই পাবলিক টয়লেটে হানা দিলেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা।
এদিন জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে নিউ টাউনের ফ্ল্যাট-সহ ঘটনাস্থল ও ভাঙড় এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় গিয়ে বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার খুন ও তাঁর দেহাংশ পাচারের ঘটনার পুনর্গঠন করল পুলিশ। বাংলাদেশের গোয়েন্দাকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের সঙ্গে ছিলেন ওয়ারি বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ আব্দুল আহাদ ও এডিসি শাহিদুর রহমান। এ ছাড়াও ছিলেন বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের আধিকারিক, সিআইডি আধিকারিকরাও।
এদিন সকালে ঝড়বৃষ্টির মধ্যেই জিহাদকে নিউ টাউনের অভিজাত বহুতলের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান গোয়েন্দারা। বাংলাদেশের সাংসদ আজিমকে খুনের পর তাঁর দেহের মাংস ও হাড় আলাদা করে ফেলে এই জিহাদ ও তার সঙ্গী সিয়াম। মাংস ও হাড় আলাদা করা হয়। একেকটি মাংসের টুকরো ছিল ৭০ থেকে ১০০ গ্রাম। পেশায় কশাই আন্দাজে মাংস কেটে তার সঙ্গে থাকা ছোট ওজনযন্ত্রে কয়েকটি মাংসের টুকরো ওজন করে দেখেও নিয়েছিল। আজিমের মাথা আধখানা করে তা-ও টুকরো টুকরো করে দেওয়া হয়। জিহাদের দাবি, মাথার টুকরো অন্য দুই অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর ও ফয়জল অন্যান্য টুকরোর সঙ্গে আলাদা ট্রলিতে পুরেছিল। ওই টুকরোগুলি দু’জন বনগাঁ সীমান্তের কাছে যশোর রোডের উপর ফেলে দেয়।
এদিন জিহাদকে নিয়ে গোয়েন্দারা নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে কোথায় তাঁকে প্রথমে বালিশচাপা দিয়ে খুন করা হয়, এর পর মেঝের কোন জায়গায় প্লাস্টিক পেতে তাঁর দেহ জিহাদ ও সিয়াম টুকরো করতে শুরু করে, তার পুনর্গঠন করেন গোয়েন্দারা। ফ্ল্যাটে বসেই বাংলাদেশের গোয়েন্দাকর্তা ভিডিও কল করে মূল অভিযুক্ত আমানুল্লাহকে ঘটনাস্থল দেখিয়ে প্রশ্ন করেন। আমানুল্লাহ ও জিহাদের বয়ান যাচাই করেন তাঁরা। এর পর তাঁরা নিউ টাউনের একটি পাবলিক টয়লেটে যান। গত ১৩ মে খুন ও দেহাংশ টুকরো করার পর আমানুল্লাহ জিহাদ ও সিয়ামকে সঙ্গে নিয়ে দেহের টুকরো ভর্তি ট্রলি নিয়ে আবাসন থেকে গাড়ি করে বের হয়। আবাসন থেকে কিছুটা দূরে একটি পাবলিক টয়লেটে জিহাদের হাতে ওই ট্রলি তুলে দিয়ে ফ্ল্যাটে ফিরে আসে আমানুল্লাহ। জিহাদ অন্য গাড়িতে ভাঙড়ের কৃষ্ণমাটি গ্রাম, পোলেরহাটের বাগজোলা খাল, রাজারহাটের একটি ভেড়িতে দেহাংশ ফেলে দেয়।
বাংলাদেশের গোয়েন্দাকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জানান, ওই দেহাংশ কীভাবে ও কোথায় ফেলা হয়েছে, জিহাদ ভাঙড়ে নিয়ে গিয়ে তাঁদের দেখায়। যদিও দেহাংশ উদ্ধার হয়নি। তবে যে অস্ত্রগুলি দিয়ে দেহের অংশ কাটা হয়েছিল, সিআইডি খালে ডুবুরি নামিয়ে সেগুলির সন্ধান চালাচ্ছে। দুদেশের পুলিশ একসঙ্গে এই খুনের তদন্ত চালাচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশের গোয়েন্দাকর্তা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.