সন্দীপ চক্রবর্তী: সর্বভারতীয় সিভিল সার্ভিসে বাংলার কৃতীরা রাজ্য সরকারের সেন্টারে আগামীবারের পরীক্ষার্থীদের সামনে তাঁদের সাফল্যের অভিজ্ঞতা শোনাবেন। তাঁরা কলকাতায় এলে সংবর্ধনাও দেবে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিসেস স্টাডি সেন্টার। সল্টলেকের এফসি ব্লকে ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে এবারই প্রথম ফুল ব্যাচ। ৫ জুন ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিসের প্রিলিমিনারিতে ২০০ জন পরীক্ষা দেবেন। এই ব্যাচ নিয়ে বেশ আশাবাদী স্টাডি সেন্টারের চেয়ারম্যান প্রাক্তন ডিজিপি সুরজিৎ করপুরকায়স্থ।
বাংলা থেকে ক্যাডার বেশি করে বের করে আনার লক্ষ্যেই ২০১৪ সালে এই সেন্টার তৈরি হয়। রাজ্যের আইএএস, আইপিএসদের যুক্ত করান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফল্য এসেছে। কিন্তু খুব দ্রুতহারে নয়। পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছিল। ঠিক সেই সময় করোনায় দুই বছর আটকে যায়। যেহেতু ইউপিএসসি‘র সিভিল সার্ভিসে নির্দিষ্ট ধাঁচে প্রস্তুতি নিতে হয়, তাই এবার বিশেষজ্ঞ ফ্যাকাল্টি আনা হচ্ছে। মূলত দিল্লি থেকে তাঁদের আনার ব্যয়ভারও নিচ্ছে রাজ্য। পূর্ণাঙ্গ এই ব্যাচই এবার পরীক্ষা দেবে। গতবার প্রিলি বা মেনে সফল যাঁরা তাঁরাও যুক্ত হয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতেই ভাল ফলের আশা সেন্টারের কর্তাদের।
রয়েছে হস্টেলে থাকা ও গ্রুপ স্টাডির সুযোগ। খরচ নামমাত্র। সাধারণের জন্য মাসে এক হাজার ও সংরক্ষিতদের জন্য পাঁচশো টাকা। ৮ থেকে ৯ মাস রাজ্যই ভর্তুকিতে ব্যয়ভার বহন করে। স্ক্রিনিং টেস্টে বাছাইয়ের পর সুযোগ মেলে। অপশনাল বা ঐচ্ছিক বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও গাইড করে সেন্টার। সুরজিৎ কর পুরকায়স্থর বক্তব্য, “বাংলার মেধা নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু সেই মেধার খুব কম অংশ সিভিল সার্ভিসে আসতে চায়। আর দিল্লির সংস্থাগুলো মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পায়। এখানেও যোগ্যতম ফ্যাকাল্টি দেওয়া হচ্ছে। খুব ভাল ফলের আশা করছি।”
এবার দ্বিতীয় অঙ্কিতা আগরওয়াল ‘বেঙ্গল ক্যাডারে’ থাকবেন। ডিপিএস রুবি পার্কে পড়াশোনা। লেকটাউনে বাড়িতে খুব তাড়াতাড়ি ফিরবেন। পরীক্ষার আগে সরিয়ে রেখেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে। ২০২০ ক্যাডারের নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ঠিক যেমন ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপ থেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন প্রস্তুতির দিনগুলিতে। ছোট থেকেই আইএএস হওয়ার জেদ ছিল। ওঁদের মতোই জেদ, অধ্যবসায় ছিল ৪৩ স্থান পাওয়া শুভম শুক্লার। পড়াশোনা দমদম ও সেন্ট জেমস স্কুলে। সেখান থেকে বিটস, পিলানি। রাজ্যের স্টাডি সেন্টারেও প্রস্তুতি সেরেছেন। অপশনাল ছিল পলিটিক্যাল সায়েন্স ও ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস। চতুর্থবারের পরীক্ষার পর একেবারে ৪৩ নম্বরে।
গতবার ৩১৮ র্যাঙ্ক থাকলেও এবার ৯৪ স্থানে ইন্দ্রাশিস দত্ত। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে মাধ্যমিক ও মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের পর ২০১১ সালে রাজ্যের জয়েন্টে ৩৫ র্যাঙ্ক। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে সুযোগ পেলেও দাদার পরামর্শে বেঙ্গালুরুর আইআইএসসিতে ভরতি হন। আইআইটি খড়গপুরের সদ্য স্নাতক দিয়া গোলদারের দেশের বাড়ি নদিয়ার বেতাইয়ে। দিয়ার র্যাঙ্ক ৬১২। বাবা অজিত গোলদার ডব্লুবিসিএস। দিয়া অবশ্য করোনায় বসে না থেকে অনলাইনে প্রস্তুতি সেরেছিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.