ফাইল চিত্র
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুদিন আগেই পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেছিলেন। শুক্রবার সেই পদত্যাগপত্র দিতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে গেলেন মিল্লি আল আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে নিজের অভিযোগগুলিও চিঠিতে জানালেন পার্থবাবুকে। যদিও পার্থবাবু সেই ইস্তফাপত্র ফেরালেন। সেইসঙ্গে বৈশাখীদেবীকে তাঁর অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। এদিন পার্থবাবুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে বৈশাখীদেবী জানান, পার্থবাবু তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি। সেইসঙ্গে নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগের সিদ্ধান্তে অনড়। চিঠিতে তিনি বেশ কিছু অভিযোগ বিস্তারিত জানিয়েছেন। সেখানে প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাবিনা নিশাত ওমারের সঙ্গে সংঘাত, সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ নিয়ে লিখেছেন বৈশাখীদেবী। একইসঙ্গে কলেজের আগের গভর্নিং বডির প্রেসিডেন্ট প্রয়াত সাংসদ সুলতান আহমেদ এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধেও অভিযোগ লিখেছেন চিঠিতে।
প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ইন্ধনে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে কর্মক্ষেত্রে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে মিলি আল আমিন কলেজের টিচার-ইন-চার্জের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তও জানিয়ে দেন বৈশাখীদেবী। একথা বলার সময়ই কান্নায় ভেঙে পড়েন মিলি আল আমিন কলেজের অধ্যাপিকা। রীতিমতো ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন তিনি। বৈশাখীর অভিযোগ ছিল, মিথ্যা অভিযোগ তুলে হেনস্তা করছেন ওই কলেজেরই প্রাক্তন টিচার-ইন-চার্জ সাবিনা নিশাত ওমার। ওই শিক্ষিকা নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতা, দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগ এনেছেন। বৈশাখীর দাবি, ওমারের আনা সব অভিযোগই ভিত্তিহীন। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ইন্ধনে তাঁকে হেনস্তা এবং অপদস্থ করা হচ্ছে। সেদিন বৈশাখী বলেন, “যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আমি এত শ্রদ্ধা করতাম, তাঁর ইন্ধনেই এমনটা হচ্ছে। আমি হতবাক।”
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেদিন পালটা মুখ খোলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বলেন, শোভন-বৈশাখীর অভিযোগে ব্যথিত। বৈশাখী অযথা সাম্প্রদায়িকতার তাস খেলছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ পার্থবাবুর বাড়িতে যান বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা বৈঠক করার পর বেরোন বৈশাখীদেবী। বেরিয়ে তিনি জানান, ‘শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এসেছিলাম। পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। আমার বেশ কিছু অভিযোগও রয়েছে পদত্যাগপত্রের সঙ্গে। এই কলেজে দীর্ঘদিনের সংঘর্ষের ইতিহাস রয়েছে। কোথায় কোথায় দুর্নীতি রয়েছে, তা নিরপেক্ষ তদন্ত হলে সত্য উদঘাটিত হবে। চিঠির শেষ আমার পদত্যাগের কথা জানানো রয়েছে। তবে উনি পদত্যাগপত্র নাকচ করে দিয়েছেন শিক্ষাক্ষেত্রে সুস্থ পরিবেশ থাকুক। ধর্মীয় তাস যাতে কেউ খেলতে না পারেন সেই আরজিই ছিল চিঠির মধ্যে।’ তাঁর ইস্তফা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘পার্থবাবু আমার ইস্তফাপত্র নাকচ করে দেন। তবে সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখে নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি সুবিচার হবে। তবে এই মুহূর্তে কলেজে যোগ দেব না। আমার সিদ্ধান্তে অনড় আমি। পার্থবাবু বলেছেন, তদন্তের পর যদি মনে হয় একই পরিবেশ রয়েছে, তাহলে তখন ভেবে দেখো।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.