ফাইল ছবি
দীপঙ্কর মণ্ডল: মিল্লি আল আমিন কলেজের দীর্ঘকালীন সমস্যার জট কাটাতে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হলেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় (Baisakhi Banerjee)। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) সঙ্গে দেখা করতে শুক্রবার বিকেলে রাজভবনে যান তিনি, সঙ্গে ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee)। কলেজের টিচার-ইনচার্জ অর্থাৎ বৈশাখীকে ইঙ্গিত করে ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য অত্যন্ত অশালীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন – এই মর্মে রাজ্যপালের কাছে নালিশ জানান তিনি।
বেশ কয়েকমাস ধরেই অচলাবস্থার মুখে মিল্লি আল আমিন কলেজ। যার জেরে অধ্যক্ষার পদ থেকে ইস্তফাও দেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সম্প্রতি পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। অভিযোগ, ছাত্রীরা পরীক্ষায় বসতে পারছেন না, বেতন ঠিকমতো পাচ্ছেন না অধ্যাপকরা। এসবের প্রতিবাদে কয়েকদিন ধরে কলেজের সামনে ধরনায় বসেছেন একদল পড়ুয়া। বৃহস্পতিবার সেখানে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যান কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম। পড়ুয়াদের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেও তিনি টিচার-ইনচার্জকে সমূলে উৎখাত করার মতো অসংবেদনশীল মন্তব্যও করেন। এই মন্তব্যকে রীতিমতো অশালীন, অপমানজনক এবং সাম্প্রদায়িক বলে চিহ্নিত করেছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন রাজ্যপালের কাছে গিয়ে তিনি তা নিয়েই নালিশ জানিয়েছেন বলে খবর।
রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বৈশাখী বেশ উষ্মার সঙ্গে বক্তব্য পেশ করেন। তাঁর কথায়, ”রাজ্যের একজন মন্ত্রী কীভাবে এমন মন্তব্য করতে পারেন? এখানে আমি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই কি সমূলে উৎখাত করার কথা বলা হয়েছে? আমার জায়গায় যদি খাতুন পদবিযুক্ত কেউ থাকতেন, তাহলেও কি উনি একই কথা বলতে পারতেন? পারতেন না। কারণ, তাহলে ভোটব্যাংকে বড় সমস্যা হয়ে যেত।” বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, ফিরহাদ হাকিমের এ ধরনের মন্তব্যের জবাব জনগণই দেবে। তাঁর মতে, এই কৃতকর্মের জন্য তাঁর কাছে নয়, বরং রাজ্যবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত ফিরহাদ হাকিমের।
এ নিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায়ও তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ”কোনও মন্ত্রিসভায় থেকে এ ধরনের কথা বলা যায় না। ফিরহাদকে আমিই বসিয়েছিলাম মিল্লি আল আমিন কলেজের দায়িত্বে। তারপর উনি ছেড়ে দেন। অন্যরা দায়িত্ব নেন। কিন্তু এ ধরনের শব্দপ্রয়োগ নিন্দনীয়। এতে আমি খুবই আঘাত পেয়েছি। কেউ যেন না ভাবেন যে তিনি যা করছেন, ঠিক করছেন। আত্মসমালোচনা করুন, ওঁঁদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।” তিনি আরও জানান যে রাজ্যপাল সহমর্মিতার সঙ্গে সব শুনেছেন, উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে পালটা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিমও। তাঁর কথায়, ”যে যা বলছে বলুক, আমি আমার কাজ করে যাব। দু’দিন আগে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিয়েছি, তবু রাস্তায় নেমে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তাই কে কী বলল, তাতে কিছু আসে যায় না। মানুষই সব বিচার করবেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.