স্টাফ রিপোর্টার: করোনা, জনতা কারফিউ, লকডাউনের পরপর ধাক্কায় মেট্রো (Kolkata Metro Rail) বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁদের রোজগারও। প্রায় ছ’মাস ধরে তিন চাকার বাহনটির জায়গা হয়েছিল গ্যারেজে অথবা পড়ে থাকত রাস্তায়। এতদিন তাঁদের পরিবারের অনেকের মুখেই দু’বেলা দু’মুঠো ভাত ওঠেনি। অবশেষে মুখ তুলে চেয়েছেন বিশ্বকর্মা। তাঁর পুজোর আগেই তাই ঘুরতে শুরু করল বহু রুটের তিনচাকা (Auto Service)। যেগুলো কিনা মেট্রো বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বসে গিয়েছিল।
সোমবার থেকে চালু হওয়া কলকাতা মেট্রোকে (Bengali News on Kolkata) কেন্দ্র করে প্রায় ৭০টি রুটের অটোচালকের মুখে ফের হাসি। ধুয়ে-মুছে, স্যানিটাইজ করে সোমবার থেকে অটো নিয়ে ফের পথে চালকরা। আগের মতো যাত্রী না হলেও পরিবারে ডাল, ভাত জোটানোর মতো যাত্রী তাঁরা পেয়ে যাবেন। এমনটাই আশা তাঁদের।
উত্তরে নোয়াপাড়া, দমদম থেকে দক্ষিণে নিউ গড়িয়া, নজরুল, গীতাঞ্জলি। মেট্রো বন্ধ হওয়ার পর থেকেই স্টেশন-লাগোয়া রুটগুলো অধিকাংশই হয়ে যায় বন্ধ। আনলক শুরু হওয়ার পর কিছু অটো রাস্তায় নামলেও যাত্রী হচ্ছিল না। তাই কোথাও দ্বিগুণ, কোথাও তিনগুণ ভাড়া হাঁকছিলেন চালকরা। কিন্তু সোমবার থেকে মেট্রোর চাকা গড়ানোয় পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। এদিন সকাল থেকেই পুরনো রুটগুলো আবার পুরনো মেজাজে ফিরেছে। আগের তুলনায় যাত্রী এদিন সেভাবে হয়নি, তবে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি যে বদলাবে, তা বেশ টের পাচ্ছেন অটোচালকরা।
একেকটি মেট্রো স্টেশনকে কেন্দ্র করে চারদিক মিলিয়ে অন্তত ছয় থেকে দশটি করে অটো রুট। অর্থাৎ একেক স্টেশনেই প্রায় একশো অটোচালকের জীবন-জীবিকা জড়িয়ে, যাঁরা এদিন থেকে ফের একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন। ধরা যাক, নোয়াপাড়া স্টেশন (Noapara)। এই স্টেশনকে কেন্দ্র করেই রয়েছে, নোয়াপাড়া-টবিন রোড, নোয়াপাড়া-ডানলপ, নোয়াপাড়া-বনহুগলি, নোয়াপাড়া-অনন্যার মতো বেশ কিছু রুট। যেগুলো যাত্রী না পেয়ে প্রায় মাছি তাড়াচ্ছিল এতদিন। অধিকাংশই গাড়ি নামাচ্ছিলেন না। এদিন থেকে ফের তিন চাকার যান নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন তাঁরা। “প্রায় ছ’মাস পর অটো নিয়ে বেরলাম। যাত্রী হচ্ছিল না দেখে বন্ধ রেখেছিলাম গাড়ি। এবার মনে হয় ধীরে ধীরে লোক হবে।” সোমবার কথাগুলো শোনা গেল দমদম- সিঁথির মোড় রুটের অটোচালক সুমিত চৌধুরির গলায়।
শোভাবাজার, গিরিশ পার্ক, এম জি রোড থেকে শুরু করে যতীন দাস পার্ক, টালিগঞ্জ, নজরুল, গীতাঞ্জলির মতো অধিকাংশ স্টেশনকে কেন্দ্র করেই গজিয়ে উঠেছিল প্রচুর অটো রুট। যেখানে একেকটি রুটে আগে ১৫ থেকে ২০টা করে অটো চলত, সেখানে মেট্রো বন্ধ থাকাকালীন নামত পাঁচ-ছ’টা অটো। কারণ, ছিল না বেশি যাত্রী। তবে বিশ্বকর্মা পুজোর আগে তাঁদের আশা, মেট্রো চালু হওয়ায় এবার তাঁদের সুদিন ফিরবে। আবার অটোর চাকা ঘুরবে আগের মতোই, পকেট ভরবে ভাড়ায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.