Advertisement
Advertisement

Breaking News

সিবিএসই

সুরের সিঁড়ি বেয়ে বাধার বেড়া পার, সিবিএসই দশমে নজিরবিহীন সাফল্য অটিস্টিক কৃতীমানের

সিবিএসই দশম শ্রেণির পরীক্ষায় কৃতীমানের প্রাপ্ত নম্বর ৯২ শতাংশ৷

Autistic child Kritiman Dasgupta scores 92% in CBSE class X exam
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 7, 2019 9:14 am
  • Updated:May 7, 2019 9:14 am  

রিংকি দাস ভট্টাচার্য: গানই তার প্রাণ। আর সেই সুরের সিঁড়ি বেয়ে যাবতীয় প্রতিবন্ধতাকে পেরিয়ে গেল কৃতীমান। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ১৬ বছরের কিশোর সিবিএসই দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। কৃতীমানের এই কৃতিত্ব দেখে তার স্কুল ডিপিএস রুবি পার্কের শিক্ষকরা তো বটেই, আপ্লুত পরিবারের সদস্যরাও।

[আরও পড়ুন: ভোটের দিন শহরে নজরদারি চালিয়ে উদ্ধার ৩০ লক্ষ টাকা]

ছোট থেকেই জটিল স্নায়বিক সমস্যায় আক্রান্ত রবীন্দ্র সরোবর লাগোয়া রসা রোডের বাসিন্দা কৃতীমান দাশগুপ্ত। কিন্তু পড়াশোনা বা গানবাজনায় তা কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি অটিস্টিক কিশোরের সামনে। মনের জোর, অন্তহীন জেদ এবং পরিবারের সকলের সাহায্যে জীবনের এক একটা কঠিন অধ্যায় পার করেছে সে। বাবা,মা দু’জনই সরকারি চাকুরে। সঙ্গী বলতে সঙ্গীত আর বোন। এনিয়েই কৃতীমানের প্রাত্যহিকতা৷ “কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি, ছেলে পরীক্ষায় এমন ফল করবে। কিন্তু ও যা করে দেখাল, আমাদের কাছে তা যুদ্ধজয়ের চেয়ে কম কিছুই নয়।” সোমবার সন্ধ্যায় কথাগুলো বলার সময় গলা ধরে আসছিল মা স্বাতী দাশগুপ্তর। জানালেন, “ওর জার্নিটা আসলে দীর্ঘদিনের। ওর লড়াইটা আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। অবশ্য স্কুলও বরাবরই পাশে ছিল।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ফণীর দাপট কাটতেই দুর্দান্ত ফর্মে গ্রীষ্ম, আজ মরশুমের উষ্ণতম দিন]

কৃতীমান শাস্ত্রীয় সংগীতের ছাত্র। নিয়মিত তালিম নেয়। কিবোর্ড, হারমোনিকার মতো বাদ্যযন্ত্রও অনায়াসে বাজায়। স্বাতীদেবী বলছিলেন, “ছোট থেকেই বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের প্রতি ছেলের ঝোঁক। কাউকে শেখাতে হয়নি। সুর, তাল,লয় নিজে নিজেই রপ্ত করেছে।” শুধু গান নয়, পড়াশোনার ক্ষেত্রেও কৃতীমানের গৃহশিক্ষক ছিল না। স্বামী রাজা দাশগুপ্তের সঙ্গে স্বাতীদেবী ছেলের পড়াশোনার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। ছেলের সাফল্য প্রসঙ্গে এদিন স্বাতীদেবীর কথায় বারবার উঠে এসেছে কৃতীমানের স্কুলের নাম। “স্কুলের শিক্ষকরা ক্লাস টেনে অঙ্ক রাখতে বলেছিলেন। কিন্তু ছেলের উপর বাড়তি চাপ পড়বে ভেবে আমরা রাজি হইনি। অঙ্কের বদলে মিউজিক নিয়েছিল।”– জানালেন স্বাতীদেবী। তাঁর বক্তব্য, “ছোট থেকে ওকে পড়াশোনায় কখনই বেশি চাপ দিইনি। কারণ মাথায় বেশি চাপ নেওয়া ওর পক্ষে ভাল হবে না, এনিয়ে চিকিৎসকরা সাবধান করেছিলেন৷”

[আরও পড়ুন: ‘অভিযুক্তকে ধরতে লাগবে ৭৫ হাজার’, পুলিশের বিরুদ্ধেই তোলাবাজির অভিযোগ]

দাশগুপ্ত দম্পতি কোনওরকম কোনওরকম প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী নন। ছেলের মানসিক ও বৌদ্ধিক বিকাশের স্বার্থে তাই সঙ্গীতকেই ওঁরা বেছে নিয়েছেন। চাইছেন সঙ্গীতই হোক কৃতীমানের জীবনের পাথেয়। বস্তুত, আর পাঁচটা  স্কুলপড়ুয়ার মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে ভীতি থাকলেও, কৃতীমান বরাবরই নির্ভীক চিত্তে স্কুলে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন তার মা। স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল ইন্দ্রাণী চট্টোপাধ্যায়ও বলছেন, “কৃতীমান সত্যিই অনন্য। পরীক্ষাকে কোনওদিনই ও আলাদাভাবে দেখেনি। তার সুফলও পেয়েছে হাতেনাতে।” ভাইস প্রিন্সিপালের প্রতিক্রিয়া, “কৃতীমানের সঙ্গে স্কুলের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ও খুবই বুদ্ধিমান। ওর এই সাফল্যে গর্বিত স্কুল।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement