Advertisement
Advertisement
কাশ্মীর

শেষ দুঃস্বপ্নের দিন, প্রশাসনের উদ্যোগে কাশ্মীর ছেড়ে ঘরে ফিরলেন ১৩৩ জন বাঙালি শ্রমিক

জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে শহরে মোমবাতি মিছিল যুব তৃণমূলের।

At least 138 labours returns Kolkata from Kashmir in evening
Published by: Sayani Sen
  • Posted:November 4, 2019 6:14 pm
  • Updated:November 4, 2019 9:41 pm  

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কেউ রেখে গিয়েছিলেন বাবা-মা। আবার কেউ অসুস্থ ভাই। কারও বা ঘরে রয়েছে ছোট্ট সন্তান আর স্ত্রী। আয় একটু বেশি হলেই পরিজনদের মুখে হাসি ফুটবে। এ কথা ভেবেই কাশ্মীরের আপেল খেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। দিব্যি চলছিল কাজ। কিন্তু জঙ্গি হামলায় পাঁচ বাঙালি শ্রমিকের মৃত্যুতেই ঘটল ছন্দপতন। তারপর থেকে আতঙ্ক যেন আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছিল তাঁদের। সোমবার বিকালে কাশ্মীর থেকে বাংলায় ফিরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন শ্রমিকরা।

গত মঙ্গলবার কুলগামে নির্বিচারে গুলি করে খুন করা হয় পাঁচ শ্রমিককে। জখম হয়েছিলেন আরও বেশ কয়েকজন। তারপর থেকে আতঙ্কেই দিন কাটাচ্ছিলেন কাশ্মীরে পেটের টানে ছুটে যাওয়া বাঙালি শ্রমিকেরা। চোখ বন্ধ করলেই কানে বাজছিল গুলির শব্দ। মৃত্যুর আশঙ্কা যেন পিছু ছাড়ছিল না তাঁদের। কাশ্মীর থেকে বহু কিলোমিটার দূরে থেকেও একই আশঙ্কা গ্রাস করেছিল শ্রমিক পরিবারগুলিকে। আপনজন আদৌ সুস্থভাবে বাড়ি ফিরবে তো, এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল তাঁদের মনে।

Advertisement

সেই আশা-আশঙ্কার টানাপোড়েনের পর অবশেষে কাশ্মীর থেকে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরলেন ১৩৮ জন শ্রমিক। সোমবার বিকেল ৫টার কিছু পরেই জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেসে চড়ে কাশ্মীর থেকে কলকাতা স্টেশনে আসেন তাঁরা। ওই শ্রমিকদের মধ্যে পাঁচজন অসমের বাসিন্দা। বাকি সকলেই এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। ওই ১৩৩ জনের মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা ১১২জন, উত্তর ২৪ পরগনা, কোচবিহার, জলপাইগুড়ির দু’জন করে মোট আটজন কাশ্মীরে গিয়েছিলেন। ওই দলে রয়েছেন বীরভূমের আটজন এবং মালদহের একজন শ্রমিক। বাংলায় ফিরলেও এখনও চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট তাঁদের। এদিন কলকাতা স্টেশনে আতঙ্কিত শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করেন কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শ্রমিকদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, “নিরাপত্তার কথা ভেবে শ্রমিকদের সুদূর কাশ্মীর থেকে এ রাজ্যে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই বাসে করেই বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হবে শ্রমিকদের।”

[আরও পড়ুন: মৃত্যুর পর দলবদল! মৃতের পরিবারকে দেওয়া সাহায্যের টাকা আটকাল বিজেপি]

এদিকে, কাশ্মীরে বাঙালি শ্রমিকদের মৃত্যুর প্রতিবাদে এদিনই শহরে মোমবাতি মিছিল করে যুব তৃণমূল। শশী পাঁজার নেতৃত্বে বিড়লা তারামণ্ডল থেকে শুরু হয় মিছিল। গান্ধীমূর্তির পাদদেশে শেষ হবে পদযাত্রা। মিছিল থেকে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে শশী পাঁজা বলেন, “শ্রমিকদের মৃত্যু নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই কেন্দ্রের। কিন্তু আমরা এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত চাই।” এখন লাখ টাকার প্রশ্ন একটাই। আর কী কাশ্মীরে যেতে চান শ্রমিকরা? আতঙ্কিত মুখে তাঁদের একটাই উত্তর, “পেটের টানে হয়তো যেতেই হবে। কিন্তু মন থেকে আর যেতে চাই না। রাজ্য সরকার রোজগারের ব্যবস্থা করলে যেতাম না।”

দেখুন ভিডিও:

ছবি ও ভিডিও: পিন্টু প্রধান

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement