সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আবহে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালগুলি থেকে কার্যত গণইস্তফা দিয়ে নিজেদের রাজ্যে ফেরার জন্য মরিয়া নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। ইতিমধ্যেই দু’দফায় প্রায় সাড়ে তিনশো জন নার্স ছেড়ে গিয়েছেন হাসপাতালের চাকরি। মণিপুর, ত্রিপুরা, ওডিশা বাস পাঠিয়ে তাঁদের রাজ্যে ফিরিয়ে নিয়েছে। এই অবস্থায় চরম সংকটে বাংলার স্বাস্থ্য পরিষেবা। এবার এই সমস্যার সমাধান চেয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি লিখল অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। তাদের আবেদন, এভাবে যাতে নার্সরা চলে না যান, সে বিষয়টা মুখ্যমন্ত্রী একবার দেখুন। চিঠি পাঠানো হয়েছে নার্সিং কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়াকেও।
গত দু’দিন ধরে কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালের কাজ ছেড়ে নিজেদের রাজ্যে ফিরে গিয়েছেন ৩৫৪ জন নার্স। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, বাংলার করোনা পরিস্থিতিতে তাঁরা সেবিকা হিসেবে কাজ করতে যথেষ্ট ভীত। নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। তাই সংক্রমণের দাপট না কমলে, তাঁরা কাজ চালিয়ে নিয়ে যেতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে যদি তাঁদের চাকরি না থাকে, তাও গ্রহণীয়। কিন্তু ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে কিছুতেই রাজি নন। শুক্র এবং শনিবার – এই দু’দিনে মণিপুর, ত্রিপুরা, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের পরিযায়ী নার্সরা ফিরে গিয়েছেন।
অথচ, এঁদের নার্সিংয়ের উপরেই নির্ভরশীল কলকাতার বহু বিখ্যাত হাসপাতাল, নার্সিংহোম। ফলে সেখানে সেবাকাজের ক্ষেত্রে সংকট দেখা দিয়েছে প্রবল। তারউপর, কয়েকটি হাসপাতালে রয়েছে COVID ওয়ার্ড। সেখানে রোগীদের চিকিৎসা কিংবা যত্নের জন্য সকলে প্রশিক্ষিত নন। সেই অভাব পূরণ করে থাকেন মূলত উত্তরপূর্বের সেবিকারা। ফলে তাঁরা চলে যাওয়ায় বেশ সমস্যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এই পরিস্থিতিতে অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছে, যে রাজ্যের বাসিন্দা এই নার্সরা, সেসব রাজ্য সরকারের সঙ্গে যেন কথা বলা হয় নবান্নের তরফে। নার্সদের এ রাজ্যেই কাজ করতে বলা হোক। তাহলে সংকটময় পরিস্থিতিতে সবটা সামাল দেওয়া যাবে। এর পাশাপাশি নার্সিং কাউন্সিলকেও আবেদন করা হয়েছে, এই করোনা পরিস্থিতিতে নার্সরা যে যেখানে কর্মরত, সেখানেই নিজেদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিক তারা। এই চিঠিতে কি সুরাহা মিলবে? তার দিকেই তাকিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.