অর্ণব আইচ: চাকরি দেওয়ার নামে জালিয়াতির নেশায় সহকর্মীকেও ছাড়েননি পুলিশ অফিসার। লালবাজারে কর্মরত একজন মহিলা এএসআইয়ের (ASI) ছেলে ও দুই বোনপোর কাছ থেকে সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police)অভিযুক্ত এএসআই ও তাঁর পঞ্চায়েত সদস্য স্ত্রী। এমনকী, স্বাস্থ্যদপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করে ভুয়ো নিয়োগপত্র ও নথিও দিতেন ওই দম্পতি ও তাঁদের চক্রের সদস্যরা। অভিযোগ এমনই। চাকরি দেওয়ার নামে বিপুল টাকা তোলার জন্য বেশ কয়েকজন এজেন্টও তৈরি করেছিলেন এই দম্পতি। সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও এজেন্ট (Agent)হিসাবে কাজে লাগানে হতো, উঠে এসেছে এমন অভিযোগও।
পুলিশ জানিয়েছে, স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করে জালিয়াতির অভিযোগে লালবাজারের গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেপ্তার হন পূর্ব কলকাতার বেনিয়াপুকুর থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর সঞ্জীব দেড়িয়া, তাঁর স্ত্রী বর্ণালি দেড়িয়া। বর্ণালি হাওড়ার খালিসানি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা ও প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। লালবাজারে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ার সৈকত দে ওরফে টিটো এবং দম্পতির গাড়ির চালক তথা এজেন্ট কার্তিক মান্না।
বাঁশদ্রোনীর বাসিন্দা তথা লালবাজারের একটি বিভাগে কর্তরত মহিলা এএসআই আখতারা বানুর সঙ্গে যোগাযোগ হয় লালবাজারেই (Lalbazar) কর্মরত সৈকতের সঙ্গে। সৈকতই তাঁকে বলেন যে, মন্ত্রীর কোটা থেকে স্বাস্থ্যদপ্তরে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। এই চক্রের পাতা ফাঁদে পড়েন মহিলা এএসআই আখতারা।
এর আগে রাজ্যজুড়ে শিক্ষক ও পুর নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে জানা সত্ত্বেও আখতারা তাঁর ছেলে, দুই বোনের দুই ছেলের স্বাস্থ্যদপ্তরে চাকরির ব্যবস্থা করতে বলেন সৈকতকে। ওই সিভিক ভলান্টিয়ার (Civic Volunteer) প্রথমে বেনিয়াপুকুর থানার এএসআই ও ক্রমে তাঁর স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্যার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। কয়েক দফায় নগদ ও ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে তিনজনের জন্য মোট সাড়ে এগারো লক্ষ টাকা আখতারা দেন ওই দম্পতিকে। তার বদলে দম্পতি জাল নিয়োগপত্রও দেন বলে অভিযোগ। ওই ভুয়া নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিতে যোগ দিতে গিয়ে তাঁরা বুঝতে পারেন যে, নথিগুলি জাল। এভাবে ওই দম্পতি তাঁদের সঙ্গে বহু প্রভাবশালীর পরিচয় রয়েছে তা দাবি তুলে আরও বহু ব্যক্তির কাছ থেকে নগদ ও ই-ওয়ালেটে ২৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা তোলেন।
ওই টাকা তোলার জন্য তাঁরা কার্তিক মান্নাদের মতো আরও কয়েকজন এজেন্টের সাহায্য নিতেন। এমনকী, সৈকতের মতো একাধিক সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশকর্মীকেও এজেন্টল হিসাবে কাজে লাগানো হত বলে অভিযোগ। তদন্ত করে ওই এজেন্টদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.