ফাইল ছবি
অর্ণব আইচ: দেশজুড়ে তিন দিনেক অতিক্রান্ত হওয়ার পর লকডাউনে ঘোরাঘুরি আর পিকনিকের মেজাজ তুলনামূলক কমল শহরে। ফলে কমল গ্রেপ্তারির সংখ্যাও।
লকডাউন লঙ্ঘন করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ১৮২ জনকে। লকডাউনের প্রথমদিন এই সংখ্যাটা ছিল হাজারেরও বেশি। এরপর ধীরে ধীরে সংখ্যা কমতে থাকে। উল্লেখ্য, এদিন লক়াউনের নিয়ম ভাঙার অভিযোগে মধ্য কলকাতা থেকে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। যদিও বৃহস্পতিবার রাতে একটি দোকান বন্ধ করা নিয়ে বউবাজার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে দোকানিদের বচসা হয় বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, এদিনও লকডাউনের সময় বিভিন্নভাবে পুলিশ সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এক যুবতী কিডনির অসুখে হাসপাতালে ভরতি। তাঁর দুই ইউনিট রক্তের প্রয়োজন। কিন্তু লকডাউনে মিলছিল না রক্ত। তাই বেলেঘাটা থানার দ্বারস্থ হন তাঁর প্রৌঢ়া মা। তাঁকে মানিকতলা ব্লাড ব্যাংকে নিয়ে গিয়ে রক্তের ব্যবস্থা করে দেয় পুলিশ। এদিন এন্টালি, ফুলবাগান, নারকেলডাঙা-সহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতবাসী ও ভবঘুরেদের মুখে খাবারও তুলে দেয় পুলিশ। এমনকী, এন্টালির একটি জায়গায় ফুটপাতবাসীদের জন্য বিরিয়ানির ব্যবস্থাও করা হয়। সেই সঙ্গে শহরে যাতে গুজব বা ভুয়ো খবর না ছড়ায়, তার জন্য তৎপর হয় লালবাজার সাইবার থানা ও স্পেশাল টাস্ক ফোর্স।
শুক্রবার গড়িয়াহাট বাজারে পুলিশ দোকানদারদের দস্তানা সরবরাহ করে। কাজ সেরে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছিলেন কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ডক্টর সৌভিক চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু কোথাও গাড়ি নেই। শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাঁকে বাগুইআটির বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন জায়গায় চলে পুলিশের নজরদারি। সকাল থেকে বাজারে ভিড় হলেও যাতে পরস্পরের কাছাকাছি কেউ না দাঁড়ান, সেই বিষয়টিও বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। শহরের কয়েকটি বাজারে নজর ছিল এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের। কারণ পুলিশের কাছে খবর যায় যে, লকডাউনের সুযোগ নিয়ে শুরু হয়েছে কালোবাজারি। চলছে বেশি দামি জিনিস বিক্রি।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে চলে নাকা চেকিং। পথচারী বা বাইক আরোহী প্রত্যেককে পুলিশ জিজ্ঞেস করেছে কী কারণে তিনি বেরিয়েছেন। সংখ্যায় কম হলেও কয়েকটি জায়গায় ছিল মানুষের জটলা। আড্ডার মেজাজে ছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। সেখানেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। লালবাজার জানিয়েছে, দক্ষিণ শহরতলি থেকে গতকাল লকডাউন লঙ্ঘনের অভিযোগে বেশি সংখ্যক গ্রেপ্তার হয়েছে। মোট ৬২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতা থেকে ৩৪ জন, পূর্ব কলকাতা শহরতলি থেকে ২৮ জন, দক্ষিণ-পশ্চিম কলকাতা তথা বেহালা অঞ্চল থেকে ২৮ জন, উত্তর কলকাতা থেকে ৯ জন, দক্ষিণ কলকাতা থেকে পাঁচ, বন্দর এলাকা থেকে দশ ও পূর্ব কলকাতা থেকে মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। করোনা থেকে বাঁচতে যাতে লকডাউনের সময় শহরের মানুষ বাড়ির ভিতরে থাকেন, মাইক নিয়ে বারবার সেই প্রচার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.