সুব্রত বিশ্বাস: রেলকর্মীদের প্রথম সারির করোনাযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা করা হোক। দ্রুততার সঙ্গে তাঁদের টিকাকরণ করতে হবে। এই আবেদন জানিয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি পাঠাল রেলমন্ত্রক। বাংলার রেলকর্মীদের দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক, চিঠিতে এমনই উল্লেখ রয়েছে বলে খবর। কারণ, এই মুহূর্তে লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকলে স্টাফ স্পেশ্যাল ও অন্যান্য কাজের জন্য নিয়মিত অফিস যাতায়াত করতে হচ্ছে রেলকর্মীদের। ফলে তাঁদের সুরক্ষাও অগ্রাধিকার পাক।
রাজ্যের কাছে আবেদন না জানিয়ে কেন রেলের কাছে আরজি? সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলির স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে এখন এই প্রশ্নই তুলছে রেল (Rail)। ৬ মে থেকে রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে সর্বসাধারণের জন্য লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়েছে। নিজেদের কর্মীদের যাতায়াতের জন্য শুধু স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেন (Staff special train) চালু রয়েছে। আর কোভিড পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের হাসপাতালে পৌঁছতে এই ট্রেনই একমাত্র ভরসা। তাই সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদের ওই ট্রেনে যাতায়াতের সুযোগ দেওয়ার আরজি জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন তালিকা এত দীর্ঘ হচ্ছে যে হিমশিম খেতে হচ্ছে রেলের আধিকারিকদের। এবার তা নিয়ে রাজ্যের কোর্টেই কার্যত বল ঠেলে দিলেন তাঁরা।
স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের জন্য হাওড়া, শিয়ালদহে দু’টি করে কামরা নির্ধারণ করে যাতায়াতের সুযোগ করে দিয়েছে রেল। এরপরেই জরুরি ভিত্তিতে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলি তাঁদের কর্মীদের স্টাফ স্পেশ্যালে চড়ার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েই চলেছে। লালবাজারের পর কলকাতা হাই কোর্টেও একই আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদন এসেছে দমকল বিভাগ, এয়ারপোর্ট, রাইফেল ফ্যাক্টরি, কর্পোরেশন, ব্লক অফিস, জল, দুধ বণ্টনের একাধিক বিভাগ থেকেও। শিয়ালদহের ডিআরএম (DRM) এসপি সিং বলেন, ”লিখিত আবেদনের পাশাপাশি বহু আবেদন ফোনেও আসছে। জেলাগুলি থেকে যে সব পরিচারিকা কলকাতায় কাজে আসেন, তাঁরা লিখিত আবেদন করতে পারবেন না বলে ফোনে কাতর আর্জি জানিয়েছেন। বলেছেন, কোভিড পরিস্থিতিতে কাজ হারালে না খেতে পেয়ে মারা যাবেন।”
বিশেষ ট্রেনে চড়তে দেওয়ার আরজি শুধুমাত্র DRMদের কাছেই নয়, আসছে রেলের সদর দপ্তরে একাধিক বিভাগীয় আধিকারিকদের কাছেও। তবে এত আবেদন সত্বেও রেল এই ছাড় দিতে অপারগ বলে জানিয়ে দিয়েছে প্রতিটি সংস্থাকেই। ডিআরএম এসপি সিং বলেন, একমাত্র রাজ্য সরকার এই ছাড় দিতে পারেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্য ট্রেন চলাচলের বিষয়ে সব রকমের পদক্ষেপ করতে পারে। রাজ্য যাদের জন্য ছাড় চাইবে, তাঁরাই একমাত্র স্পেশ্যাল ট্রেনে ওঠার অনুমতি পাবেন। অন্যথায় রেলের তরফে এ নিয়ে বাড়তি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। রাজ্য চাইলে ট্রেন বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নেবে তারা। যে সংখ্যক ট্রেন চলে তার অর্ধেক ট্রেন চালিয়ে রেল পরিস্থিতি সামাল দিতে চায়। এসপি সিং মনে করেছেন, রেল চললে সড়ক পরিবহণে চাপ কমবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.