নব্যেন্দু হাজরা: এরাও আমাদের সহকর্মী। অত্যন্ত বিশ্বস্ত সহকর্মী। জটিল মার্ডার কেস থেকে দুঃসাহসিক ডাকাতি, বহু অপরাধের কিনারায় এরাই ছিল সবচেয়ে বড় ভরসা।
কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডের সদস্য সেই চারপেয়েদের নিয়ে চার মিনিটের ভিডিওটি নিজেদের ফেসবুক পেজে আপলোড করার সময় লালবাজারের কর্তারা স্বপ্নেও ভাবেননি, এমন বিচিত্র সাড়া পাবেন। গোয়েন্দা কুকুরদের কীর্তিকলাপ দেখেশুনে কিছু লোক এমনই মোহিত যে, তাদের পোষ্য নেওয়ার জন্য আবেদন করে বসেছেন ওই ফেসবুক পেজেই। এদের মধ্যে ডাক্তার থেকে পড়ুয়া- বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষ রয়েছেন। ওঁরা চাইছেন ‘চাকরি’ থেকে অবসর নেওয়া কুকুরকে নিজের বাড়ি এনে রাখতে। কীভাবে তা সম্ভব, তা জানতে চেয়ে প্রশ্নের স্রোত উপচে পড়ছে।
[ স্বার্থে আঘাত লাগাতেই কি বিক্ষোভ? প্রশ্ন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশের ]
ঘটনা হল, অবসর নেওয়া পুলিশ কুকুরদের বাইরের লোকের হাতে দেওয়ার একটা সংস্থান আছে। কিন্তু তা বিশেষ ক্ষেত্রে। অনেক নিয়ম মেনে। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ নিজের কাছে রাখতে গেলে পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করতে হয়। পুলিশ দেখে, যিনি কুকুর নিজের কাছে রাখতে চাইছেন, তিনি কতটা উপযুক্ত। তাঁর কাছে আদৌ পুলিশে থাকা কুকুর ভাল থাকবে কি না। অনেক কিছু বিবেচনা করার পর সন্তুষ্ট হলে তবেই আবেদনকারীর আবেদন গ্রাহ্য হয়। কিন্তু এভাবে ভিডিও দেখে যে আবেদন আসবে, তা বুঝতে পারেননি বহু পুলিশকর্তাই। এক কর্তার কথায়, আট বছর বয়স হলে ডগ স্কোয়াড থেকে অবসর নেয় কুকুররা। পুলিশও চায়, অবসর নেওয়ার পর তারা যেন যত্নে থাকে। ভাল থাকে। কিন্তু ভিডিওতে কুকুরের কীর্তি দেখে যেভাবে আবেদন আসতে শুরু করেছে, তা নিয়ে ভাবতে হবে। এটা আমরা আশা করিনি। কলকাতা পুলিশের তৈরি এই ভিডিওতে কুকুরদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার যাবতীয় মুহূর্তই তুলে ধরা হয়েছে। উদ্দেশ্য, সকলকে তাদের কীর্তি জানানো।
[ রাতের কলকাতায় ফের শুটআউট, লক্ষ্য যুব তৃণমূল নেতা? ]
“আমরা কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডের অবসরপ্রাপ্ত কুকুরকে দত্তক নিতে পারি!”– প্রশ্নকর্তা চিকিৎসক পূর্ণেন্দু মণ্ডল। একইধরনের প্রশ্ন মীনাক্ষী দত্তরও। তিনিও চান অবসরপ্রাপ্ত গোয়েন্দা কুকুরকে দত্তক নিতে। লালবাজার সূত্রে খবর, ডগস্কোয়াডের কুকুর ৬ মাস অথবা ১০ মাস বয়স থাকাকালীন আনা হয়। তারপর শুরু হয় প্রশিক্ষণ। ৬ মাসের ট্রেনিং। আর গোটা বছরই চলে তাদের নানা শারীরিক কসরৎ। তারা আর পাঁচটা কুকুরের থেকে আলাদাই হয়। ফলে অবসর নিলেও হঠাৎ করে কারও হাতে এদের তুলে দেওয়া যায় না। তবু নিয়ম মেনে কেউ আবেদন করলে তা বিবেচনা করা হয়। জানান এক পুলিশকর্তা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.