ছবি: প্রতীকী
কলহার মুখোপাধ্যায়: আপার প্রাইমারি (Upper Primary)শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্রেক আপ নম্বর-সহ ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করল স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। বৃহস্পতিবার কমিশনের নিজস্ব ওয়েবসাইটে এই তালিকা প্রকাশিত করা হয়েছে। তবে তা সামনে আসার পর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছেন প্রার্থীদের একাংশ। যোগ্য নম্বর থাকা সত্ত্বেও অনেকের নামই তালিকায় নেই বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে দিয়েছে।
উচ্চ প্রাথমিকের আবেদনকারী হিসেবে যতজন প্রার্থী নিজেদের নথি যাচাইয়ের জন্য অনলাইনে তা আপলোড করেছিলেন, তাঁদের বিস্তারিত তথ্য সামনে আসার পর দেখা গিয়েছে, সবমিলিয়ে প্রায় ১ লক্ষ ৩২ হাজার প্রার্থীর বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। পাঁচটি বিভাগে ভাগ করে প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী তথ্য দেওয়া হয়েছে এসএসসি’র তরফে –
১. যে সমস্ত প্রার্থী ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পেয়েছেন, তাঁদের জন্য আলাদা লিংক দিয়ে নম্বর-সহ সমস্ত বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।
২. যে সব প্রার্থীরা ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পাননি, তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর কাট অফ মার্কসের নিচে থাকায় আলাদা লিংক দিয়ে ব্রেক আপ নম্বর-সহ সব তথ্য দেওয়া হয়েছে।
৩. যে সব প্রার্থীর নথি আপলোড সমস্যার কারণে বাতিল হয়েছেন, তাঁদের জন্য আলাদা লিংক দিয়ে সমস্ত তথ্য বিস্তারিতভাবে দেওয়া হয়েছে।
৪. যে সব প্রার্থীর প্রশিক্ষণ নেই তাঁদের তালিকা আলাদা লিংক দিয়ে বিস্তারিত তথ্য-সহ দেওয়া হয়েছে।
৫. বিষয়ভিত্তিক মিডিয়াম, সাবজেক্ট ক্যাটাগরি ভিত্তিক জেন্ডার অনুযায়ী সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন কাট অফ মার্কস প্রকাশিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুন স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে ইন্টারভিউ লিস্ট (Interview list) প্রকাশের পর তাতে নানা অসঙ্গতির অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়। এর ফলে পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে। সেই মামলার পরবর্তী শুনানিতে গত ২ জুলাই আদালত ইন্টারভিউ তালিকায় যাঁদের নাম আছে তাঁদের ছাড়াও ভেরিফিকেশনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের ব্রেক আপ স্কোর আগামী সাতদিনের মধ্যে কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার নির্দেশ দেয়।
এই তালিকা প্রকাশের অব্যবহিত পর থেকেই প্রার্থীদের একাংশ একাধিক অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার অনেক রাত পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় মুহুর্মুহু অভিযোগ উঠে এসেছে। তাঁদের অভিযোগ, তালিকায় নাম নেই। অনেকে আবার, একাধিক অসঙ্গতি চিহ্নিত করে অস্বচ্ছতার অভিযোগও তুলেছেন। একইসঙ্গে যেসব প্রার্থী যোগ্যতামান উত্তীর্ণ করে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন, তাঁরা জানিয়েছেন, এবার আদালতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বিষয়ে ক্যান ফাইল মামলা আপিল করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন। তাঁদের যুক্তি, বারবার সঠিক টেট ও অ্যাকাডেমিক যোগ্যতা অর্জন করে মেধা তালিকায় নাম আসছে, কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ার কারণে দীর্ঘ আট বছর ধরে চাকরিতে যোগদান থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে তাঁদের। নানাবিধ অসঙ্গতির অভিযোগে একাধিক মামলা হয়েছে আপার প্রাইমারি নিয়োগকে ঘিরে। আর থমকে গিয়েছে নিয়োগ।
পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সহ-সভাপতি সুশান্ত ঘোষ জানিয়েছেন, “আদালতের রায়ে সকলের ব্রেক আপ-সহ নম্বর প্রকাশ কমিশনের যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তবে প্রার্থীমহলে কিছু অভিযোগ উঠে আসছে। দীর্ঘ আট বছর নাগাদ প্রার্থীরা নিয়োগের জন্য অপেক্ষা করছেন, অনেকের বয়স শেষ পর্যায়ে। কোনও যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত না করে বর্ধিত শূন্যপদে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ৩১ জুলাই মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হোক।” অন্যদিকে, ইন্টারভিউ তালিকায় থাকা যোগ্য প্রার্থীদের প্রশ্ন, কমিশনের অসংগতি কারণে অসংখ্য টেট স্কোর ও অ্যাকাডেমিক স্কোর যোগ্যতা অর্জন থাকা সত্ত্বেও কেন বারবার বঞ্চিত হচ্ছে চাকরিপ্রার্থীদের? কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন বারবার অস্বচ্ছতার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.