Advertisement
Advertisement

ফের কাঠগড়ায় অ্যাপোলো, পেসমেকার বসানোর বিভ্রাটে রোগীর মৃত্যু

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জরুরি তলব মুখ্যসচিবের।

Apollo in deep slush as patient dies of negligence
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 25, 2017 8:52 am
  • Updated:February 25, 2017 8:57 am  

স্টাফ রিপোর্টার: কিছুতেই হুঁশ ফিরছে না অ্যাপোলো হাসপাতালের! এবার চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ৷ মৃতের পরিজনের সঙ্গে আমজনতার তুমুল বিক্ষোভ অ্যাপোলোর ভূমিকার বিরু‌দ্ধে৷ বকেয়া বিল আদায়ের জন্য মুমূর্ষু এক রোগীকে আটকে রাখা৷ বকেয়া টাকার প্রায় আড়াইগুণ স্থায়ী আমানত হাসপাতালে জমা রাখতে বাধ্য করা৷ রোগীর পরিবারকে দিয়ে সাদা কাগজে ‘প্রমিসারি নোট’ বা মুচলেকা লিখিয়ে বাড়তি বিল! ফিক্সড ডিপোজিট জমা রাখার পরও চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যু৷

(টাকার জন্য রোগী আটকে রাখায় মৃত্যু হল যুবকের)

শুক্রবার সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার অ্যাপোলোয় ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ৷ অ্যাপোলোয় একের পর এক গাফিলতির ঘটনায় ক্ষুব্ধ নবান্ন৷ এদিন দুপুরে অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষকে তলব করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব৷ স্বাস্থ্য সচিব মারফত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তলব করা হয়েছে৷ সতর্ক করার পরও কেন এত অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সেই কৈফিয়ত তলব করা হবে৷ ইতিমধ্যেই অ্যাপোলোর তিন কর্তা স্বাস্থ্যভবনে পৌঁছেছেন।

Advertisement

(‘সেবা বিক্রি হয় না’, বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর)

টাউন হলের বৈঠকেই অ্যাপোলো হাসপাতালকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই ধরনের কার্যকলাপ যে রাজ্য সরকার বরদাস্ত করবে না ওই বৈঠকে অ্যাপোলোর প্রতিনিধিকে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাও রোগী আটকে রাখা৷ চিকিৎসায় গাফিলতি৷ আকাশছোঁয়া বিল৷ চিকিৎসা সম্পর্কিত কোনও তথ্য না দেওয়া৷ একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে অ্যাপোলো হাসপাতালে৷ আজ দুপুরে এবিষয়ে উত্তর চাওয়া হয় অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষকে৷ কীভাবে একটি হাসপাতাল ফিক্সড ডিপোজিট জমা রাখতে পারে৷ এবিষয়ে তাদের কোনও এক্তিয়ার রয়েছে কি না সেবিষয়েও কৈফিয়ত চাওয়া হয়৷ চিকিৎসায় গাফিলতিতে এদিন অ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৬০ বছরের এক বৃদ্ধার৷ শনিবার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় রত্না ঘোষ নামে ওই বৃদ্ধার৷

(প্রকাশ্যে গায়ে আগুন, বৃদ্ধের আত্মহত্যাতেও নির্বিকার প্রত্যক্ষদর্শীরা)

বর্ধমান টাউন থেকে ১১ ফেব্রূয়ারি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভরতি হন৷ চিকিৎসকরা জানান, ভালব জনিত সমস্যা রয়েছে৷ ভালব পরিবর্তন করতে হবে৷ সেজন্য অপারেশন করা দরকার৷ এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি অপারেশন করা হয়৷ অপারেশনের পর কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলেও ফের বুকে সংক্রমণ দেখা দেয় এবং শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে৷ পালস রেট বাড়তে থাকে৷ এরপরই ফের তাঁকে আইসিইউতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ মোট ১৪ দিন আইসিইউতে রাখা হয়৷ পরিবারের অভিযোগ, প্রথম চারদিনে চার লক্ষ টাকা নেওয়া হয়৷ তারপর বলা হয় পেসমেকার বসাতে হবে৷ ২৩ ফেব্রূয়ারি ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে পেসমেকার বসানো হয়৷ চিকিৎসকরা জানান, সুস্থ আছেন রত্নাদেবী৷ শনিবারই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান চিকিৎসকরা৷ কিন্তু শনিবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ হাসপাতাল থেকে ফোন করে মৃত্যুসংবাদ জানানো হয় পরিবারকে৷ পরিবারের অভিযোগ, আইসিইউতে ভর্তি হওয়া থেকে শনিবার পর্যন্ত চিকিৎসকদের গাফিলতি ছিল৷ কী চিকিৎসা হয়েছে তা জানতে চাইলে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি৷ রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা জানালে আইসিইউতে নিয়ে দায় সেরে ফেলে৷ পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি চাওয়া হলে একটি ইসিজি রিপোর্ট দেওয়া হয়৷ অভিযোগ সেই ইসিজি রিপোর্টে জানুয়ারি মাসের তারিখ উল্লেখ ছিল৷ অথচ রত্না দেবী হাসপাতালে ভর্তি হন ফেব্রূয়ারি মাসে৷ এছাড়াও অভিযোগ, যে চিকিৎসক রত্নাদেবীর পেসমেকার বসান সেদিনের পর থেকে তাঁকে আর দেখা যায়নি৷ রোগীর পরিবারের লোকজন বলেন, “ধাপে ধাপে আমরা মোট ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছি৷ ভাল চিকিৎসার জন্য বর্ধমান থেকে এখানে ছুটে এসেছিলাম৷ আজ বিকেলেই রোগীকে ছেড়ে দেবে বলেছিল৷ চূড়ান্ত গাফিলতিতে হঠাৎই এই ঘটনা৷”

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে অ্যাপোলোর সিইও জয় বসুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি৷ হাসপাতালের একটি মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ২৪ তারিখ রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল ছিল৷ রাত ৩.৪৫ মিনিট নাগাদ হঠাত্‍ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement