গোবিন্দ রায়: আরও বিপাকে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) মেয়ে। এবার টেট দু্র্নীতিতে নাম জড়াল সুকন্যা মণ্ডলের। অভিযোগ, টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট পাশ না করেও প্রাথমিক শিক্ষকতা করতেন তিনি। কলকাতা হাই কোর্টে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতির মেয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। এছাড়া অনুব্রত ঘনিষ্ঠ আরও পাঁচজন বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন বলেই দাবি তাঁর।
বোলপুরের কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন সুকন্যা মণ্ডল। আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের দাবি, কোনওদিন তিনি বিদ্যালয়ে যাননি। রেজিস্টার অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পাঠানো হত। বাড়িতে বসে ওই খাতায় সই করতেন সুকন্যা। অনুব্রতর মেয়ে-সহ ৬ জনের বিরুদ্ধেও হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। আইনজীবীর দাবি, অনুব্রতর ভাই সুমিত মণ্ডল, আপ্তসহায়ক অর্ক দত্ত, ভাইপো সাত্যকী মণ্ডল, তৃণমূল নেতা ঘনিষ্ঠ কস্তুরী চৌধুরী, সুজিত বাগদিও বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটের মধ্যে টেট সার্টিফিকেট এবং নিয়োগপত্র-সহ ওই ছ’জনকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তলবে সাড়া না দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কড়া ব্যবস্থা। বুধবারই বীরভূমের পুলিশ সুপারকে এই রায় নিয়ে আদালতের তরফে অবগত করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগে শিরোনামে চলে আসেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারান। দুই কিস্তিতে ৪১ মাসের বেতনও ফেরত দেন তিনি। আগামিকাল হাই কোর্টে কী হয়, সেদিকে নজর সকলের। এদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দেহরক্ষী বিশ্বম্ভর মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ দশ প্রাথমিক শিক্ষককে সিবিআই জেরার মুখোমুখি হওয়ার নির্দেশ। আগামী ১ সেপ্টেম্বর সিবিআই অফিসে গিয়ে তাঁদের যোগাযোগ করার নির্দেশ হাই কোর্টের। এই ১০ জনের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি যাচাই করবে সিবিআই।
বুধবার প্রাথমিক মামলায় হাই কোর্টে স্ট্যাটাস রিপোর্ট পেশ করে সিবিআই। ২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে যে দু’টি নিয়োগ প্রক্রিয়া সংগঠিত হয়েছিল তার মেধাতালিকা আদালতে পেশ করার নির্দেশ। ২০১৬ এবং ২০২০ সালের প্রাথমিকের মেধাতালিকা পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর মেধাতালিকা পেশ করার নির্দেশ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। গত ২০ জুন আদালতে বেশ কিছু নথি পেশ করে পর্ষদ। সেই নথি বৃহস্পতিবারের মধ্যে দিল্লি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানোর নির্দেশ বিচারপতির। হাই কোর্টের নির্দেশ, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে সিবিআইকে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দেহরক্ষীর ঘনিষ্ঠ, তারা সরাসরি আত্মীয় নাও হতে পারেন, তারা কীভাবে চাকরি পেলেন, তার এটা তদন্ত হওয়া উচিত বলেই মন্তব্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.