সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে পথে নেমে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লেন পড়ুয়ারা। আজ বিকেলে শহিদ মিনার থেকে বিজেপি রাজ্য দপ্তর পর্যন্ত মিছিলে শামিল হন প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়-সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের একাংশ। মিছিলে হাঁটেন অবিজেপি ছাত্র ও যুব সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। মিছিল মুরলীধর সেন লেনে বিজেপি কার্যালয়ের সামনে পৌঁছতেই মিছিল থেকে CAA বিরোধী স্লোগান ওঠে। বিজেপি যুব কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি বেঁধে যাওয়ার উপক্রম হলে পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণ করতে যায়। তাতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোনকারীদের ধস্তাধস্তি বেঁধে যায়। অশান্তির জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের একাংশ।
কেন্দ্রের CAA বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ জনতা থেকে পড়ুয়া, সর্বস্তরের মানুষের একটা অংশ শামিল। দেশজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একদল ছাত্রছাত্রী এই আইনের বিরোধিতায় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ করেছেন। দিল্লির জামিয়া মিলিয়া থেকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতার প্রেসিডেন্সি থেকে যাদবপুর, এসআরএফটিআই – বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরাও বিরোধিতা সরব হন। শনিবার বিকেলে এই ছাত্র-যুব সম্প্রদায়ের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল এই প্রতিবাদ মিছিল। অন্যদিকে, এই কর্মসূচি আটকাতে পালটা প্রস্তুত ছিল বিজেপিও। ফলে অশান্তির আশঙ্কা ছিলই। তাই আগে থেকেই বিজেপি রাজ্য দপ্তরের সামনে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন ছিলই।
এদিনের মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া তথা অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্টই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ করে বলেন, ‘মানুষ এটা চায় না। তাই তাদের হয়ে আমরা পথে নেমেছি।’ তাঁরই নেতৃত্বে মিছিল এগিয়ে পৌঁছয় সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে বিজেপি কার্যালয়ের সামনে। সেখানে বিজেপির পতাকা পোড়ান মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের কেউ কেউ। তাতেই আগুনে ঘি পড়ে। বিজেপি সমর্থকরাও পালটা ঝাঁপিয়ে পড়েন আন্দোলনকারীদের উপর। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদর সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে তাঁরা এগোতে চাইলে আহত হন কয়েকজন। পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পালটা মিছিলে নামে বিজেপিও। সেখান থেকে CAA’র সমর্থনে স্লোগান ওঠে। তাঁদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা, বিপ্লবীদের ছবি দেওয়া প্ল্যাকার্ড।
তবে শেষ পর্যন্ত তা আয়ত্বে আনে পুলিশ। মিছিল ফের এগিয়ে যায় মহাজাতি সদনের দিকে। ধর্মতলার মোড়ে মিছিল পৌঁছে সেখানে অবস্থান শুরু হয়। ছোটখাটো বক্তব্যও রাখেন মিছিলে অংশগ্রহণকারী পড়ুয়ারা। গানবাজনার মাধ্যমেও চলে প্রতিবাদ। এক ছাত্রী স্পষ্ট জানান, এভাবে মিছিল আটকানোর চেষ্টাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, বিজেপি কতটা বল প্রয়োগ করতে চায়। এরপর সিএএ, এনআরসি বিরোধিতা আরও বাড়বে। তবে শেষপর্যন্ত মিছিল থেকে তীব্র অশান্তি রুখতে পুলিশ বেশ সদর্থক ভূমিকা নিয়েছে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.