Advertisement
Advertisement

কাটা পা হাতে নিয়ে হাসপাতালের দরজায় দরজায় ঘুরলেন রোগী

অমানবিকতার চরম নিদর্শন!

Another medical negligence case happened as patient moves hospitals with amputed legs
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 16, 2017 4:50 am
  • Updated:March 16, 2017 4:58 am  

স্টাফ রিপোর্টার: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তার পরও হুঁশ ফিরল না শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলির৷ কাটা পা হাতে নিয়ে শহরের দু’টি বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরে বেড়ালেন এক রোগী৷ কেউ ভর্তি নিল না৷ উল্টে চরম অমানবিকতার নির্দশন দেখিয়ে একটি হাসপাতাল রোগীকে জানিয়ে দেয়, আগে ৫০ হাজার জমা করুন, তারপর রোগী ভর্তি নেব৷ পরে পিজি (এসএসকেএম) হাসপাতাল যখন রোগীকে ভর্তি নেয় তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে৷ পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ১০ ঘণ্টা৷ রাত পর্যন্ত পিজির তরফেও ‘কাটা পা’ সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা হয়নি৷ চোখে পড়েনি জোড়া লাগানোর কোনও চেষ্টাও৷

রোগীর নাম সুনীল পাত্র৷ পেশায় কাঁকড়া ব্যবসায়ী৷ বুধবার সকাল দশটা নাগাদ এক পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে দাঁড়িয়ে কুলতলি থানা এলাকার মনসাতলা মোড়ে কথা বলছিলেন সুনীলবাবু৷ ওই সময় একটি চালবোঝাই লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা দেয় সুনীলবাবুকে৷ গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বাঁ পা৷ স্থানীয় বাসিন্দারাই সুনীলবাবুকে উদ্ধার করে জয়নগরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান৷ ওখান থেকে ‘রেফার’ করা হয় কলকাতায়৷ সল্টলেকের ‘হার্ট ক্লিনিক’-এ প্রথমে আসেন সুনীলবাবু৷ ওই বেসরকারি হাসপাতাল সুনীলবাবুর সঙ্গে থাকা লোকজনদের স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কাটা পা জোড়া লাগানোর চিকিৎসা এখানে হয় না৷ আপনারা সিএমআরআই-তে যান৷ সল্টলেক থেকে অ্যাম্বুল্যান্স ছোটে মোমিনপুরের সিএমআরআই হাসপাতালে৷ সল্টলেক হার্ট ক্লিনিকের সম্পাদক ডা. কৃষান প্রধান জানিয়েছেন, “আমরা চেষ্টা করেছি, যাতে রোগীর কোনও ক্ষতি না হয়৷ কাটা পা’টাকে কীভাবে সংরক্ষণ করতে হবে তাও বুঝিয়ে দিয়েছিলাম৷ ক্লিনিকে ব্লাড ব্যাঙ্ক নেই৷ অস্ত্রোপচার করতে হলে বাইরে থেকে রক্ত আনতে হত৷ আমাদের দোষারোপ করা উচিত নয়৷”

Advertisement

[সাগরে কপিল মুনির আশ্রম ভাঙার নির্দেশ দিল আদালত]

এদিকে সুনীলবাবুর এক বন্ধুর অভিযোগ, সিএমআরআই রোগী ভর্তির জন্য ৫০ হাজার টাকা চায়৷ কিন্তু তাঁদের কাছে ৩০ হাজারের বেশি ছিল না৷ অনেক অনুনয়-বিনয়েও কাজ হয়নি৷ বরং সিএমআরআই জানিয়ে দেয়, পঞ্চাশের পর ২ লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে বৃহস্পতিবার৷ সেই সঙ্গে রোগীর বন্ধুদের মনে করিয়ে দেওয়া হয় যে, এই রোগীর চিকিৎসা করাতে ১৮-২০ লক্ষ টাকা খরচ হবে৷ এখন সামান্য কাঁকড়া ব্যবসায়ীর পক্ষে ওই টাকা জোগাড় করা অসম্ভব৷ তাই বাধ্য হয়েই সুনীলবাবুকে নিয়ে আসা হয় পিজি হাসপাতালে৷ কিন্তু ততক্ষণে প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ কুলতলি থেকে পিজি– দীর্ঘ যাত্রাপথে কাটা পা সুনীলবাবুর সঙ্গেই অ্যাম্বুল্যান্সে ঘুরেছে৷ যখন যেখানে চিকিৎসায় গিয়েছেন সেখানে প্লাস্টিকে মোড়া কাটা পা-টিও গিয়েছে৷ কিন্তু একজনও সেই পা সংরক্ষণের কোনও চেষ্টা করেনি৷ সুনীলবাবুর বন্ধুরা জানিয়েছেন, কাটা হাত, কাটা-পা জোড়া লাগানোর বেশ কয়েকটি খবর ‘প্রেস কমফারেন্স’ করে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে সিএমআরআই৷ অথচ, বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলন দেখা গেল না৷ তাঁদের কথায়, সিএমআরআই পা-টি সংরক্ষণের চেষ্টা করতে পারত৷ তা না করে ২০ লক্ষ টাকার ‘গল্প’ শুনিয়ে রোগীকে ফিরিয়ে দিল৷

[মন্ত্রিসভায় রদবদল এপ্রিলে, মন্ত্রক হারাতে পারেন জেটলি-সুষমা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement