কলহার মুখোপাধ্যায়: নতুন বছরের গোড়াতেই দুঃসংবাদ। ১ জানুয়ারি থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সল্টলেকের আনন্দলোক হাসপাতাল। সোমবার হাসপাতালের গেটে লক আউটের নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, কর্মচারী সংগঠনের দুই নেতৃত্বে বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা।কিন্তু কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত মানবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন হাসপাতালের কর্মীরা। তবে কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। তাঁরা এখন কোথায় যাবেন, কী করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালেও বেনিয়মের অভিযোগে হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে বিভিনন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে আর্থিক সাহায্য পেয়ে হাসপাতালটি ফের চালু করা হয়। তবে এবার আর চালু করার কোনও সম্ভবনা নেই বলেই জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বাড়তে থাকা লোকসান আর কর্মীদের একাংশের বিশৃঙ্খলার জন্যই শেষপর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। তাঁরা আরও জানিয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে কোনও কর্মীকে বেতন বা বকেয়া টাকাও দেওয়া হবে না। যদিও কর্মচারীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এই সিদ্ধান্ত মানবেন না। হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডি কে শরাফের দাবি, “আমাদের হাসপাতালের টাকা তছরুপ করে সংগঠনের দুই নেতা নিজেদের ব্যবসা বৃদ্ধি করছে। এরফলে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। আমি আর টাকা দিতে পারছি না এখন। সেই কারণেই আমি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছি।” তিনি আরও জানান,” ওই নেতৃত্বকে যদি সরিয়ে দেওয়া হয় তাহলেই আমি আবার ধার করে এনে হলেও হাসপাতালের কর্মীদের মাইনে দিয়ে আবার পুরনরুজ্জীবিত করে তুলব। কিন্তু ওই দুই নেতৃত্বরা থাকলে আমার পক্ষে এই হাসপাতাল চালানো সম্ভব হবে না।” এই পরিস্থিতিতে গুরুতর বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশ থেকে আসা রোগীরা। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এই মুহূর্তে তাঁরা কোথায় যাবেন, ভেবে পাচ্ছেন না। যদিও অধিকাংশ রোগীকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেই হাসপাতাল সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৬ মার্চ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পিএফের টাকা জমা না দেওয়ায় অভিযোগে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আনন্দলোক হাসপাতালের সমস্ত শাখা। সেসময় কর্মীরা এবং সল্টলেকের কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আর্থিকভাবে তাঁদের সহায়তা করায় পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ২০২০-এর গোড়াতেই তালা ঝুলতে চলেছে আনন্দলোকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.