ছবি: অরিজিৎ সাহা
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরনে নীল সোয়েটার এবং সবুজ রংয়ের প্যান্ট। ছোট্ট বালক। বিস্মিত দু’টি চোখ। ছোট ছোট পায়ে অচেনা পথে হেঁটে চলেছে। না, চাঁদের পাহাড় তার লক্ষ্য নয়। তার লক্ষ্য কলকাতার চিড়িয়াখানায় ঢোকা। পাটনা থেকে একা তিলোত্তমায় পা রেখেও স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল তার। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করেছে। বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা চলছে তাকে।
করোনার ধাক্কা কিছুটা হলেও সামলে উঠেছেন প্রায় সকলেই। ধীরে ধীরে কাটছে আতঙ্ক। ঘরের কোণ থেকে বেরিয়ে শীতের রোদ্দুর গায়ে মেখে তিলোত্তমার ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। আর একবেলার ছুটি কাটানোর জন্য চিড়িয়াখানা সবসময়ই ভ্রমণপিপাসুদের সেরা গন্তব্য। নিরাপত্তারক্ষীরা ভিড় সামাল দিতে অভ্যস্ত। তাঁরা সাধারণত দেখেন, বাবা-মা কিংবা বড়দের হাত ধরেই শিশুরা চিড়িয়াখানায় ভিড় জমাচ্ছে। তাই একা এই বালককে চিড়িয়াখানার সামনে ঘুরতে দেখে অবাক হয়ে যান। চিড়িয়াখানায় প্রবেশের মুখে তাকে আটকে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
একা কেন, সে প্রশ্ন করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। বালক জানিয়ে দেয়, বাড়িতে বাবা-মা বকাবকি করেছিল। তাই মন ভাল নেই তার। অভিমানে পাটনা থেকে ট্রেনে চড়ে বসে। পৌঁছয় হাওড়া স্টেশন। হতে পারে সে পাটনার বাসিন্দা, তবুও কলকাতার চিড়িয়াখানার কথা শুনেছে। মনে মনে ভেবেছিল একদিন ঘুরতে যাবে। পাটনা থেকে হাওড়ায় পৌঁছে প্রথমেই চিড়িয়াখানায় যাওয়ার কথা মনে পড়ে। বাঘ, সিংহ দেখার টান ছোটবেলায় কে-ই বা উপেক্ষা করতে পারে। তাই তো পায়ে হেঁটে চিড়িয়াখানার উদ্দেশে রওনা দেয়। রাস্তায় খিদে পেয়ে যায়। খাবার চেয়েই খায়। তবে লক্ষ্যে অবিচল। পথচলতিদের জিজ্ঞাসা করে চিড়িয়াখানায় পৌঁছে যায়। ঢোকার মুখে পুলিশি বাধা। চিড়িয়াখানায় বাঘ, সিংহ আর দেখা হল না তার।
নিরাপত্তারক্ষীরা সোজা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে যায় তাকে। আধিকারিকরা পুরো বিষয়টি জানতে পারেন। শিশুটি সবিস্তারে পুরো ঘটনা জানায়। এরপর ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় বালককে। ইতিমধ্যে পাটনা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে বাড়ি আর ফিরতে চায়নি সে। কারণ একটাই বাবা-মা নাকি বড্ড মারধর করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.