অনির্বাণ বিশ্বাস: আইনের গেরোয় পড়ে এবার বন্ধ হল বিধাননগরের আনন্দলোক হাসপাতাল। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কর্মীদের পিএফের টাকা সময় মতো জমা দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই মঙ্গলবারের মধ্যে হাসপাতালকে সুদ ও জরিমানা মিলিয়ে প্রায় ৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা জমা দিতে বলেছিলেন পিএফ কমিশনার। কিন্তু সেই টাকা দিতে না পারার কারণে হাসপাতাল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিন থেকেই হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তির প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়েছে। তবে যে সমস্ত রোগীরা ভর্তি রয়েছেন তাঁদের চিকিৎসা ঠিক মতোই করা হবে বলে জানানো হয়েছে হাসপাতালের পক্ষ থেকে। শুধু বিধাননগর নয়, গোটা দেশে ছড়িয়ে থাকা ১১টি ইউনিটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, হাসপাতালের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিজ করে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল বন্ধের সিদ্ধান্তে বিপাকে সেখানকার কর্মী এবং ভর্তি থাকা রোগীর আত্মীয়-পরিজনরাও। কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কায় বহু কর্মী। পাশাপাশি রোগীর চিকিৎসা নিয়েও চিন্তিত তাঁদের বাড়ির লোকজন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করলেও পুরোপুরি চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না তাঁরা। সোমবার হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডি কে সরাফ জানিয়েছিলেন, ‘পিএফ কমিশনের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে যে সময়মতো কর্মীদের পিএফের টাকা জমা না দেওয়ায় সুদ ও জরিমানা মিলিয়ে ৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিতে হবে মঙ্গলবারের মধ্যে। কিন্তু ওই টাকা দিতে হলে হাসপাতাল চালানোর মত অবস্থায় তাঁরা থাকবেন না। আর সেকারণেই মঙ্গলবার থেকে নতুন করে রোগী ভর্তি করা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
দেড় বছর আগেও একই কারণে ১৭ লক্ষ টাকা দিতে হয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। তখনও হাসপাতালের অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছিল পিএফ কমিশন। এবারেও একই রকম ভাবে ওই অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই বিষয়ে ডি কে সরাফ জানিয়েছিলেন, ‘আমরা মানুষের কাছে থেকে অনুদান নিয়ে হাসপাতাল চালাই। সরকারি কোনও সাহায্য পাই না। সেই কারণে অনুদানের টাকা আসতে সময় লেগে যায়। সেই কারণে পিএফে টাকা জমা দিতে কয়েক দিন করে সময় লেগে যায়। কিন্তু এর জন্য আমাদের মতন সেবা প্রতিষ্ঠানের এত বড় জরিমানা করা হলে আমাদের পক্ষে আর কোনও ভাবেই এই সংস্থান চালানো সম্ভব নয়। তাই আমরা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে মঙ্গলবারের পরেও যাদের কোনও অপারেশনের দিন আগে থেকে নির্ধারিত করা আছে তাদের ছাড়া আর কারও কোনই চিকিৎসা করা হবে না।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.