অভিরূপ দাস: হাসপাতাল বলছে, বেড ছিল না। অথচ স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন (Health Commission) জানাচ্ছে, এই তথ্য মিথ্যে। একাধিক বেড ছিল। করোনা আবহে হাসপাতালের এই মিথ্যে কথার জেরে প্রাণ সংশয় হওয়ার জোগাড় হয়েছিল প্রৌঢ় অমিতাভ সাহার। করোনা সংকটের সময় এই মিথ্যাচারের ঘটনায় তিন লক্ষ টাকা জরিমানা করা হল সল্টলেক আমরি (AMRI,Salt Lake) হাসপাতালকে। যার মধ্যে দু’লক্ষ টাকা রোগীর পরিবারকে দিতে হবে। বাকি এক লক্ষ টাকা দিতে হবে বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালকে। অলাভজনক এই সংস্থার সম্পাদক অনিল সাহা জানিয়েছেন, এখানে শুধুমাত্র চিকিৎসার খরচটুকুই নেওয়া হয়। এক টাকাও লাভ না রেখে চিকিৎসা করা হয়। দূরদূরান্ত থেকে প্রচুর দরিদ্র মানুষ এখানে আসেন চিকিৎসা করাতে। সর্বসাধারণের কথা ভেবে স্বাস্থ্য কমিশনের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন সকলে।
কোভিড (COVID-19) আবহের ঘটনা। শ্বাসকষ্ট নিয়ে সল্টলেক আমরি হাসপাতালে গিয়েছিলেন বছর সাতষট্টির অমিতাভ সাহা। প্রৌঢ় অমিতাভবাবুর স্ত্রী সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের চাকরি করতেন। ওই গবেষণা সংস্থার সঙ্গে সল্টলেক আমরি হাসপাতালের গাঁটছড়া রয়েছে। ওই সংস্থায় অবসরপ্রাপ্ত অথবা কর্মরত কর্মীদের চিকিৎসা হবে সল্টলেক আমরি হাসাপাতালেই। সেইমতো চিকিৎসা পাওয়ার আশাতেই সল্টলেকের ওই বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন অমিতাভবাবু। অভিযোগ, তাঁর স্ত্রীর অফিসের সঙ্গে এ হাসপাতালের ‘টাই-আপ’ রয়েছে, এমন কথা শোনার পরেই আর তাঁকে চৌহদ্দির মধ্যে প্রবেশ করতে দেয়নি হাসপাতালের কর্মীরা। বারান্দা থেকেই বলে দেওয়া হয়, “বেড নেই। অন্যত্র চলে যান।”
মধ্যরাতে অসুস্থ কোভিড রোগী অমিতাভবাবু ভরতি হন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। অমিতাভবাবুর বন্ধু, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী রঞ্জিত শুর সেসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর কথায়, “এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ষাটোর্ধ্ব মানুষ, অক্সিজেন স্যাচুরেশন তলানিতে। বারংবার বলার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মিথ্যে কথা বলে। জানায় ১ টাও বেড নেই।” এই ঘটনা শোনার পর স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ”আমরা খতিয়ে দেখেছি, ওই দিন সল্টলেক আমরিতে ২টো বেড ছিল। ওই হাসপাতালের ঢাকুরিয়া শাখায় ২৩টা বেড ছিল।
কেন অফিসের সঙ্গে গাঁটছড়া থাকলে ভরতি নেওয়া হয় না?” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কর্মচারীরা জানিয়েছেন, এহেন পরিস্থিতি সঙ্গে সঙ্গে বিলের টাকা পায় না হাসপাতাল। ইচ্ছেমতো বিল বাড়ানোরও সুযোগ থাকে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.