সন্দীপ চক্রবর্তী: আমফান বেশ ক্ষতি করেছে বাংলার বিস্তীর্ণ অংশের। বিশেষ করে দুই ২৪ পরগনা জেলার। দু’দিন ধরে রাজ্যের আমফান বিধ্বস্ত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনের পর তা বেশ বুঝলেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। আজ দুপুরে নবান্নে মুখ্যসচিবের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকে সেকথা তাঁরা মেনেই নিলেন। এই সংক্রান্ত সমস্ত রিপোর্ট আজ তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। ১লক্ষ ২হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে হিসেব দিয়েছে নবান্ন। যার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যাই ২৮ লক্ষ। প্রতিনিধি দলের যাবতীয় প্রশ্নের উত্তরও যথাযথভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আজই কেন্দ্রীয় দলটি দিল্লি ফিরে যাচ্ছে। রবিবার কেন্দ্রের হাতে রাজ্যের আমফান সংক্রান্ত রিপোর্ট তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা।
বৃহস্পতিবার রাজ্যে এসে শুক্রবার দফায় দফায় দুই ২৪ পরগনায় আমফান বিধ্বস্ত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন কেন্দ্রীয় প্রতনিধিদলের ৭ জন। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং, বহু জায়গাতেই গিয়েছেন তাঁরা। শনিবার সকালেও প্রায় সারপ্রাইজ ভিজিটের মতো তাঁরা চলে গিয়ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর ১ নং ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাটানদিঘি গ্রামে। বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখে কেন্দ্রীয় দলের ৭ সদস্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথাও বলেন। তাঁদের পেয়ে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন।
এদিকে, প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিরোধী দলের নেতারাও এদিন দেখা করেন। আমফানের ক্ষতি মোকাবিলায় কেন্দ্র যাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়, সেই আরজি জানান সকলেই। দলের সদস্যরাও তাঁদের আশ্বাস দেন যে কেন্দ্রের কাছে যথাযথ রিপোর্ট পেশ করে গোটা পরিস্থিতির কথা বোঝাবেন। সেইমতো আজ দুপুরে কেন্দ্রীয় দল নবান্নে পৌঁছয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশদ্বারে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষার পর ভিতরে যেতে দেওয়া হয়। মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার ঘরে বৈঠকে ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও। সেখানে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তাঁরা কথাবার্তা বলেন। পরিস্থিতি যে ভয়াবহ, তা কার্যত মেনে নেন সদস্যরা। এও জানান যে এখনও কোনও কোনও এলাকা এতটাই বিপর্যস্ত যে তাঁরা সেখানে প্রবেশও করতে পারেননি।
আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা, ত্রাণ বিলি নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে বিরোধীরা যে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে দিয়েছিলেন, তা খারিজ করে মুখ্যসচিব কেন্দ্রীয় দলকে জানান যে সব কাজ যথেষ্ট ভালভাবেই চলছে। রাজনীতি নয়, এই মুহূর্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করাই রাজ্যের মূল লক্ষ্য। নবান্ন থেকে রিপোর্ট নিয়ে দিল্লি ফিরে যায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.