ফাইল ছবি
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও টিটুন মল্লিক: দু’দিনের পশ্চিমবঙ্গ সফরের জন্য কলকাতায় এলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পর তাঁকে ঢাকঢোল বাজিয়ে স্বাগত জানান বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্য বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়, কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আজ রাতটা কলকাতায় বিশ্রাম নিয়েই আগামীকাল সকালে বাঁকুড়ার উদ্দেশে রওনা দেবেন অমিত শাহ (Amit Shah)।
সেই উপলক্ষে রাঢ়বঙ্গেও এখন সাজো সাজো রব। বৃহস্পতিবার দিনভর রাড়বঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় কাটাবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বাঁকুড়া-পুরুলিয়া রাজ্য সড়কের মাঝে থাকা মুন্ডা বিদ্রোহের অন্যতম নেতা বিরসা মুন্ডার মূর্তিতেও মাল্যদান করবেন। এই বিরসা মুন্ডার হাত ধরেই আদিবাসী জাগরণ সূচিত হয়েছিল। আদিবাসী সমাজের মানুষজনের কাছে বিরসা মুন্ডা ছিলেন ধরতি আবা অর্থাৎ ভগবান। আদিবাসী সমাজের সেই ভগবানকে সম্মান জানিয়েই রাঢ়বঙ্গে কর্মসূচি শুরু করবেন কেন্দ্রের এই বিজেপি (BJP) নেতা।
এরজন্য বুধবার সকালে বাঁকুড়ার পুয়াবাগান মোড় থেকে চতুরডিহি গ্রামে যাওয়ার পথে বাঁকুড়া-পুরুলিয়া রাজ্য সড়কের উপর চৌমাথায় অবস্থিত বিরসা মুন্ডার প্রতিকৃতিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ধুয়ে মুছে ফেলতে দেখা যায় রাজ্যের পূর্ত ও সড়ক দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীদের। রাস্তা জুড়ে মেটাল ডিটেক্টার দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করতে দেখা যায় নিরাপত্তারক্ষীদের। বৃহস্পতিবার বেলা এগারোটার নাগাদ বাঁকুড়ায় আইলাকান্দি হেলিপ্যাডে নামার কথা অমিত শাহের। তারপর সড়ক পথে পুয়াবাগানে গিয়ে বিরসা মুন্ডার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করার পর বাঁকুড়া শহরের রবীন্দ্র ভবনে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেবেন তিনি। এর জন্য বুধবার বাঁকুড়া শহরের রবীন্দ্র ভবনের সামনে থেকে চতুর্ডিহি গ্রাম পর্যন্ত রাস্তা মুড়ে ফেলা হয়েছে বিজেপির পতাকায়। অন্যদিকে গত মার্চ মাস থেকে করোনার কারণে বন্ধ থাকা রবীন্দ্র ভবনের দরজা খুলে দেওয়া হয়ছে বিজেপির এই হাই ভোল্টেজ কর্মসূচি জন্য। গত মঙ্গলবার থেকে চলছে রবীন্দ্রভবন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ।
স্থানীয় সাংসদ সুভাষ সরকার জানাচ্ছেন, বেলা সাড়ে এগারোটা রাড়বঙ্গের ৯টি জেলার দলীয় কার্যককর্তাদের নিয়ে এই রবীন্দ্রভবনেই বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বেলা তিনটে থেকে এখানেই রাঢ়বঙ্গের জেলাগুলি থেকে আসা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করবেন।
রবীন্দ্র ভবনের সাজসজ্জা থেকে খুঁটিনাটি দেখছেন বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সভা সম্পর্কে তিনি বলছেন, সভামঞ্চ জুড়ে থাকবে আদিবাসী নৃত্যশৈলীর নানান মডেল। শহরজুড়ে একাধিক তোরণ করা হয়েছে। শহরজুড়ে ঝোলানো হয়েছে অমিত শাহ, মুকুল রায়, বাবুল সুপ্রিয়, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, সুভাষ সরকারদের ছবি দেওয়া কয়েকশো ব্যানার। এই সভামঞ্চ দফায় দফায় পরিদর্শন করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অরবিন্দ মেননও।
অন্যদিকে বুধবারই রবীন্দ্রভবনের সীমানা প্রাচীর জুড়ে আচমকাই লাগিয়ে দেওয়া হয় কয়েকশো তৃণমূল পতাকা। পরে তৃণমূলের এই পতাকাগুলি খুলে ফেলতে তৎপর হতে দেখা যায় সাংসদ তথা যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁকে। যদিও তা খুলে ফেলা হয়নি। সৌমিত্র খাঁ জানিয়েছেন, রবীন্দ্রভবনে যখন বিজেপি নেতা অমিত শাহ বৈঠক করতে আসছেন ঠিক তখনই এই চত্বর জুড়ে তৃণমূলের পতাকা ঝুলিয়ে দেওয়া মেনে নেওয়া যাবে না। যদিও এবিষয়ে কোন বক্তব্য রাখতে চাননি বাঁকুড়া জেলা বিজেপির সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র।
এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, রাজগ্রাম ব্রিজে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া হোর্ডিং দীর্ঘদিন আগেই লাগিয়েছি। আর বুধবার তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠক ছিল তৃণমূল ভবনে। সেই কারণেই শহরজুড়ে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়েছি আমরা।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.