ছবি: প্রতীকী
অভিরূপ দাস: পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। রাস্তা মেরেকেটে ৬ কিলোমিটারের। অথচ সেই দূরত্ব যেতেই ৯ হাজার টাকা দাবি করে বসল অ্যাম্বুল্যান্স চালক। এত টাকা দিতে পারেনি দুই শিশুর পরিবার। তাই করোনা আক্রান্ত শিশুদের অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামিয়ে দিল চালক। কলকাতার অমানবিক এই ঘটনায় হতবাক চিকিৎসকেরা।
এনসেফেলাইটিস ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত ওই দুই শিশুর শরীরে মিলেছে সার্স কোভ ২ ভাইরাস। ওই দুই শিশু আপাতত বিপন্মুক্ত। তবে এ ধরণের উপর্যপুরি সংক্রমণ নিয়ে চিন্তায় চিকিৎসকরা। আইসিএইচ সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগেই তীব্র জ্বর নিয়ে প্রায় অচেতন অবস্থায় ভরতি হয়েছিল দশ মাসের এক শিশু। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, স্ক্রাব টাইফাস আক্রান্ত সে। কিন্তু একাধিকবার রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায় তার অন্য পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে একসঙ্গে জোড়া আক্রমণের রিপোর্ট মেলে। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে বলা হচ্ছে, ডেঙ্গু শক সিনড্রোম উইথ করোনা। বছর নয়েকের আরেকটি শিশুরও তীব্র জ্বর ছিল। পরীক্ষা করলে তার শরীরেও মেলে করোনা। ওই দুই শিশুকেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শিশুদের পরিজনেরা কীভাবে করোনা আক্রান্তদের নিয়ে কলকাতা মেডিক্যালে যাবেন, সেই ভাবনাচিন্তা করতে থাকেন। আর ঠিক তখনই অ্যাম্বুল্যান্স চালকের দুর্ব্যবহারের শিকার হন তাঁরা। কারণ, মাত্র ৬ কিলোমিটার রাস্তা যাওয়ার জন্য ৯ হাজার টাকা দাবি করে অ্যাম্বুল্যান্স চালক। তাঁদের কাছে এত পরিমাণ টাকা নেই বলেই জানান মধ্যবিত্ত পরিবারের অভিভাবকেরা। অভিযোগ, তা জানার পর রোগীকে মাঝপথেই নামিয়ে দেয় অ্যাম্বুল্যান্স চালক। খুলে নেওয়া হয় অক্সিজেনের নল।
শেষমেশ রোগীর পরিবারের পাশে দাঁড়ান ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের জুনিয়র রেসিডেন্ট ডা. শাশ্বত বর্মা। তিনিই অন্য অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেন। ২ হাজার টাকাও দেন রোগীর পরিবারকে। ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রভাস প্রসূন গিরি জানিয়েছেন, অনের দরিদ্র মানুষ সঠিক চিকিৎসা পেতে এই হাসপাতালে আসেন। অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের দাদাগিরি বন্ধে অবিলম্বে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.