গৌতম ব্রহ্ম: সময়সীমা বেঁধে দিলেন মুখ্যসচিব। সাতদিনের মধ্যেই সঠিকভাবে সমস্ত অভিযোগের নিষ্পত্তি করে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ পাঠাতে হবে। বৃহস্পতিবার চিঠি দিয়ে সমস্ত দপ্তরকে জানিয়ে দিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সচিবদের মনে করিয়ে দিলেন, রিপোর্ট যেন দায়সারা গোছের না হয়। যুক্তিগ্রাহ্য হয়।
অভিযোগকারীকে খুঁজে পাওয়া না গেলে বা মোবাইল নম্বর নট রিচেবল হলে আবেদনকারীর ঠিকানায় অফিসার পাঠিয়ে ভালভাবে খোঁজ নিতে হবে। এর পরেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকারের সব দপ্তর। সাধারণ মানুষ যাতে অভাব-অভিযোগ জানাতে পারেন তার জন্যে নবান্নে গ্রিভান্স সেল খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সেখানে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। বহু অভিযোগ উঠে এসেছে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচি ও দুয়ারে সরকারের শিবিরের মাধ্যমেও। এই সমস্ত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়ে দ্রুত সমাধান ও নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় সমস্ত দপ্তরকে ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ জমা করতে হয়েছিল।
কিন্তু তাতে খুশি নন মুখ্যসচিব। বেশ কিছু রিপোর্ট তিনি ফেরত পাঠিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ফের অভিযোগকারীর সঙ্গে কথা বলে, কিংবা অকুস্থল পরিদর্শন করে রিপোর্ট পাঠাতে হবে। অর্থাৎ রিপোর্ট যেন বায়বীয় না হয়। কোনও আবেদন নাকচ করার যথেষ্ট কারণ যেন দর্শানো হয়। যদি কোনও ব্যক্তির কোনও প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্যতা থাকে, অথচ আবেদন না করে থাকেন. তবে তাঁর আবেদনপত্র জমা করার ব্যবস্থা করতে হবে। মুখ্যসচিব এদিন পই পই করে সচিবদের জানিয়ে দিয়েছেন, প্রতিটি অভিযোগ ধরে ধরে ভাল করে খুঁটিয়ে দেখতে হবে।
বুধবারই সব দপ্তরের মন্ত্রী ও আধিকারিকদের নিয়ে নবান্ন সভাঘরে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী একটি বাচ্চা মেয়ের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, ‘‘একটা পাঁচ বছরের মেয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চেয়েছিল। কিন্তু তাকে তো দেওয়া যায় না। তাই আমি বললাম, ওকে ডেকে বলো, তুমি এটা পাওয়ার যোগ্য নও। তবে তুমি কন্যাশ্রী পাবে। তোমাকে কন্যাশ্রী করে দিচ্ছি।’’ তার পরই মুখ্যমন্ত্রী আধিকারিকদের স্পষ্ট বার্তা দেন, ‘‘মানুষকে মানবিক দিক থেকে একটু বুঝিয়ে বলতে হবে। মানবিকভাবে কাজটা করতে হবে। মানুষের কাজ মানুষ যাতে পায় তা দেখতে হবে।’’
আবেদন প্রসেস করার ব্যাপারে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলিকে আরও সক্রিয় করার নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরই এদিন মুখ্যসচিবের এই চিঠি! স্বভাবতই সব দপ্তরেই তুমুল তৎপরতা শুরু হয়েছে। নাগাল না পাওয়া আবেদনকারীদের বাড়িতে অফিসার পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে। আসলে ২৬ তারিখের বৈঠকের জন্য ১৯ এপ্রিলের মধ্যে সব দপ্তরকেই রিপোর্ট জমা করতে হয়েছিল। নবান্ন সূত্রের খবর, সেই রিপোর্টে অনেক জায়গা যুক্তিসঙ্গত মনে হয়নি নবান্নর। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে। অকুস্থলে অফিসার পাঠায়। কিছু রিপোর্ট দায়সারা বলে মনে হয়। এর পরই সাতদিনের সময়সীমা বেঁধে সচিবদের ফের রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.