রিংকি দাস ভট্টাচার্য ও অভিরূপ দাস: মাউসে ক্লিক করলেই শীতের রোদমাখা ছুটির শহরে এবার দিনভর আমোদের আয়োজন! সৌজন্যে অনলাইন টিকিট বুকিং সিস্টেম। বিদেশে যেমনটা হয়। চিড়িয়াখানায় ঢুকতে আর টিকিটের লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হবে না।
[ক্যালকাটা ওয়্যার চিটফান্ডে তল্লাশি, শাহজাহানের খোঁজে সিবিআই]
ক্যালেন্ডারের পাতায় ডিসেম্বরের দেখা মিললে বাঙালির মনে আনন্দের ফুলঝুরি জ্বলে। স্কুলে ছুটির ঘণ্টা। সকাল থেকে চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া, জাদুঘর, প্ল্যানেটোরিয়াম, ইডেন গার্ডেন। আর সমস্যাটা সেখানেই! শীতকাল আসতেই কাতারে কাতারে মানুষ বউ-বাচ্চা নিয়ে ভিড় জমান শহরের বহু চেনা এই বেড়ানোর ঠিকানাগুলিতে। তখন সকাল হতেই এই সব জায়গায় টিকিট কাউন্টারের সামনে থইথই ভিড়। লম্বা, বিরক্তিকর লাইন। টিকিট কেটে ভিতরে ঢোকার আগেই অর্ধেক দিন শেষ।
[বর্ষবরণের টানে চোরাপথে এ রাজ্যে ঢুকছে বাংলাদেশি বারবনিতারা]
এই ছবিটা বদলাতে ক’দিন আগেই অনলাইনে টিকিট কাটার ব্যবস্থা চালু করেছে ভারতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। এবার সেই পথেই হাঁটতে চলেছে মহানগরীর অন্য তিন ‘হট ডেস্টিনেশন’ আলিপুর চিড়িয়াখানা, তারামণ্ডল ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। উদ্দেশ্যটা সহজ! ট্রেন বা বিমানের মতো আগে থেকেই টিকিট কেটে রাখা যাবে। আগাম কাটা সেই টিকিট পকেটে নিয়েই বাড়ি থেকে রওনা দেবেন দর্শককুল। তিন হট ডেস্টিনেশনের মধ্যে চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে চিড়িয়াখানায়। বড়দিনের মরশুমে রোজ আলো ফুটতেই প্রবেশপথে লক্ষ লক্ষ দর্শক। যেমন গত বছর পয়লা জানুয়ারি চিড়িয়াখানায় দর্শক সংখ্যা হয়েছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার। কিন্তু অত কাউন্টার কোথায়? কোথাও চারটে, কোথাও বা মেরে কেটে দু’টো। উৎসব—পার্বণের দিনে বাড়তি কাউন্টার খোলা হয় ঠিকই। কিন্তু মানুষের কৌতূহলের জেরে লাইন পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সেই ছবিটা পাল্টাতেই অনলাইন টিকিটের চিন্তাভাবনা, জানাচ্ছেন রাজ্য জু অথরিটির মেম্বার সেক্রেটারি বিনোদকুমার যাদব। তাঁর দাবি, এর জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। যাদব বলেন, “সফটওয়ার টেস্টিং চলছে। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি চালু করতে পারব। নতুন বছরের শুরু থেকে দর্শকদের যাতে লাইনে কষ্ট করে না দাঁড়াতে হয়, তার জন্য এই ব্যবস্থা।” অনলাইনে টিকিট কাটার পরিষেবা চালু করতে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের সাহায্য নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
[নজরদারির অভাবে চরিত্র বদল চড়ুইভাতির, দূষণের কবলে পিকনিক স্পটগুলি]
একই সুর বিড়লা তারামণ্ডলের অধিকর্তা দেবীপ্রসাদ দুয়ারির। এদিন তিনি বলেন, নতুন রূপে তারামণ্ডলকে দেখতে রোজই ভিড় জমাচ্ছেন অসংখ্য আকাশপ্রেমী। টিকিটের লম্বা লাইন সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মীদের। দর্শকরাও বিরক্ত হচ্ছেন। হাউসফুল দেখে বিরক্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে। সেজন্য মাল্টিপ্লেক্সের কায়দায় অনলাইনে টিকিট কাটার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দুয়ারির কথায়, “ইতিমধ্যে বুক মাই শো-র সঙ্গে একপ্রস্থ কথা হয়ে গিয়েছে। সব ঠিকঠাক চললে নতুন বছরেই আগেভাগে টিকিট কেটে প্রেক্ষাগৃহে ঢুকতে পারবেন দর্শকরা।”
[খুন হয়েছে ‘পুষি’, বিচার চেয়ে থানায় বৃদ্ধ]
শহরের অন্য দ্রষ্টব্য স্থান জাদুঘরে অনলাইন টিকিট বুকিং বেশ কিছুদিন চালু হয়েছে। ভালো সাড়া মিলছে বলেও দাবি অধিকর্তা জয়ন্ত সেনগুপ্তের। এদিন তিনি বলেন, জাদুঘরের অনলাইন টিকিটের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালেও অনলাইন টিকিট ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। আগামী ২৪ তারিখ থেকেই ভিক্টোরিয়ার ওয়েবসাইট থেকে মিলবে টিকিট। লম্বা লাইন এড়াতে টিকিট ভেন্ডিং মেশিন ও স্মার্ট কার্ডও চালু করছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.