আলিপুর চিড়িয়াখানায় সেই ক্যাঙারু।
নিরুফা খাতুন: বছর কয়েক আগে মা মারা গিয়েছে। সেই ইস্তক বাবার কোল ঘেঁষে বেড়ে উঠছিল শিশুকন্যা। বাবা-মেয়ের দিন ভালোই কাটছিল, মায়ের শোক ভুলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে একমাত্র সন্তান। কিন্তু জাপান থেকে আনা ধূসর ক্যাঙারু দম্পতির পুরুষটিও সম্প্রতি মারা যাওয়ায় সাত বছরের ডাগর মেয়ে এখন অনাথ।
এমতাবস্থায় তার ভবিষ্যৎ ভেবে চিন্তায় পড়েছেন আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। বয়ঃপ্রাপ্ত তরুণী ক্যাঙারুর জন্য জীবনসঙ্গীর খোঁজ চলছে। এবং পাত্র পেতে তাঁরা এবারও সেই জাপানের দ্বারস্থ। জাপানের আগে চেক প্রজাতন্ত্র ধূসর ক্যাঙারু পাঠিয়েছিল আলিপুরে। তবে তাদের বাঁচানো যায়নি। ফের ধূসর ক্যাঙারু আনার উদ্যোগ শুরু হয়। যার ফলশ্রুতিতে ২০১৭ সালে আলিপুর চিড়িয়াখানাকে চারটি ধূসর ক্যাঙারু উপহার দেয় বন্ধু জাপান। কানাজাওয়া চিড়িয়াখানা থেকে কলকাতায় পা রাখে একজোড়া স্ত্রী ও একজোড়া পুরুষ ক্যাঙারু। তারা আলিপুরের পরিবেশের সঙ্গে বেশ খাপ খাইয়ে নিয়েছিল।
এক বছর বাদে, ২০১৮ সালে তাদের পরিবারে এক কন্যাসন্তানের জন্ম। বড়রা কেউ আর বেঁচে নেই, তাই এখন সে-ই একমাত্র বংশধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে
পারে। ঘর-সংসার করার মতো বয়সও হয়ে গিয়েছে। এবং তার জন্য উপযুক্ত পাত্র পেতেও ভরসা সেই জাপান। আলিপুর চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, জাপান থেকে পাঠানো ক্যাঙারুগুলোর মধ্যে একটি যে পুরুষ বেঁচে ছিল, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে সেটি মারা গিয়েছে বয়সজনিত কারণে। পরিবারের সবেধন নীলমণি মেয়েটির জন্য পুরুষসঙ্গী খোঁজা হচ্ছে। যেহেতু তার বাবা-মা জাপান থেকে এসেছিল, তাই তার জন্যও জাপান থেকে সঙ্গী আনার কথা ভাবা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রাথমিকস্তরে আলোচনাও সারা।
উল্লেখ্য, জাপান সরকার আলিপুরকে ক্যাঙারুগুলো উপহার হিসাবে দিয়েছিল, যা কিনা ব্যতিক্রম। বিশ্বজুড়ে সাধারণত বিনিময় প্রথায় চিড়িয়াখানায় পশু-পাখি নিয়ে আসা হয়। অর্থাৎ, এক চিড়িয়াখানা থেকে কাউকে আনতে হলে প্রতিদানে সেখানে কোনও পশু-পাখি পাঠাতে হয়। তবে চার ধূসর ক্যাঙারুর বিনিময়ে আলিপুরের তরফে জাপানকে কিছু পাঠাতে হয়নি। সোমখ মেয়ের জন্য সৎপাত্র পেতে এবারও জাপানের কাছ থেকে ক্যাঙারু উপহার পাওয়ার আশায় রয়েছে আলিপুর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.