Advertisement
Advertisement

বাংলায় মদ নিষিদ্ধ করার দাবি জোটের!

বিহারের মতো এ রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ করার দাবি উঠল৷

Alchohol should be banned in Bengal, claims alliance
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 29, 2016 10:04 am
  • Updated:October 27, 2018 5:25 pm  

স্টাফ রিপোর্টার: বিহারের মতো এ রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ করার দাবি উঠল৷ মঙ্গলবার বিধানসভায় বাজেটের জবাবি ভাষণে এই  দাবিতে সরব হয় বাম ও কংগ্রেস৷ প্রসঙ্গটি তোলেন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রামজ৷ সেই দাবিকে সমর্থন জানান বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী৷ কক্ষের বাইরে একই কথা বলেন প্রবীণ কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া, অসিত মিত্ররা৷ এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানিয়েছেন, বিধানসভায় নিজের ভাষণেই এ বিষয়ে যা বলার বলবেন৷ একইসঙ্গে শেষ দু’বছরের ‘ক্যাগ’ রিপোর্ট প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী৷

এদিন বিধানসভায় রাজ্য বাজেটের উপর আলোচনার শেষ দিন ছিল৷ সেই আলোচনায় অংশ নিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রামজ বলেন, এ রাজ্যে মদ বিক্রি করে কর বাবদ সরকারের প্রচুর আয় হচ্ছে৷ প্রতিবেশী বিহারের উদাহরণ টেনে তাঁর বক্তব্য, “সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে আমাদের রাজ্য তো শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায়৷ তিনি মদ বন্ধ করেছেন৷ এর ফলে ওখানে নারী নিগ্রহ কমেছে৷ অথচ এই রাজ্যে সরকার মদ বিক্রিতে উৎসাহ দিচ্ছে৷” বিরতির পর বলতে উঠে সেই প্রসঙ্গ তুলে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “বিহার যা পারল, তা এই রাজ্য করে দেখাতে পারছে না কেন৷” বাম বিধায়কদের সুরে নীতীশ কুমারের উদাহরণ টেনে রাজ্যে মদ বিক্রির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে কটাক্ষ করেন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান৷ তিনি বলেন, “রাজ্যে স্কুল, কলেজ, মন্দির, মসজিদের যদি সংখ্যা বাড়ে, আমরা মনে করি শিক্ষা-ধর্মাচারণে আগ্রহ বাড়ছে৷ তাহলে মদের দোকান বাড়লে কীসের চর্চা বাড়ে?” অধিবেশনের শেষে বাইরে সাংবাদিক সম্মেলনে মানস ভুঁইয়া বলেন, “মদের আসক্তি থেকে বাংলাকে বাঁচাতে হবে৷ বউদের বলছি, স্বামী মদ খেয়ে বাড়িতে এলে পেটান৷ মদের ভাটিখানা ভেঙে দিন৷”

Advertisement

কক্ষের বাইরে এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এখন বিধানসভার অধিবেশন চলছে৷ ফলে যা বলার অধিবেশন কক্ষের মধ্যেই বলব৷” বাজেট আলোচনার শেষ দিনে এদিন তৃণমূল বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী রাজ্যের ঋণের বোঝা ৩৪ বছরের বাম শাসনে কী করে সাড়ে ১৬ গুণের বেশি বৃদ্ধি পেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন৷ তাঁর কথায়, “স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৭৭ সালের ১ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যে ঋণের পরিমাণ ছিল ১২৫৭ কোটি টাকা৷ কোন জাদুতে এই ৩৪ বছরে ঋণের পরিমাণ ২ লক্ষ ৩ কোটি টাকায় এসে দাঁড়াল৷” তিনি বলেন, বাম আমলে রাজ্যের মানুষ আর্থিক ভাঁওতার মধ্যে পড়েছিল৷ আর মা-মাটি-মানুষের সরকার আসার পর ২০১২-১৩ অর্থবর্ষের ‘ক্যাগ’ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্যে আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরেছে৷ কংগ্রেস বিধায়ক অপূর্ব সরকার অন্য রাজ্যগুলির বিভাগীয় বৃরি হারের তুলনামূলক সমীক্ষা তুলে ধরে প্রশ্ন করেন, বাংলা কেন পিছিয়ে থাকবে? বাম পরিষদীয়
দলনেতা সুজন চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, বাজেটে অর্থমন্ত্রী যে কথা বলেছেন, তা সঠিক নয়৷ তাঁর প্রশ্ন, “রাজ্যের রাজস্ব বৃদ্ধির হার কী? ২০১১ সালে ঋণের পরিমাণ ছিল ৭২ হাজার কোটি টাকা৷ পাঁচ বছরে তা বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ৩ হাজার কোটি টাকা৷ খরচের পরিমাণ বেড়েই চলেছে৷” তাঁর বক্তব্য, “উচিত ছিল নিজেদের আয় বাড়ানোর রাস্তা তৈরি ও অনাবশ্যক খরচ কমানো৷” সুজনবাবুর অভিযোগ, রাজ্য সরকার শূন্যপদে নিয়োগ বন্ধ রেখে ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাঁচিয়েছে৷ রাজ্যে শিল্পায়ন প্রসঙ্গে সিঙ্গুরের ন্যানো কারখানার প্রসঙ্গ টানেন তিনি৷ আবদুল মান্নান বলেন, রাজ্যে বড় শিল্প নেই৷ কুটির শিল্পের অবস্থা তথৈবচ৷ বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে একের পর এক তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র৷ বলেন, “আমাদের সরকারের লক্ষ্য পিছিয়ে পড়া মানুষকে সামনের সারিতে নিয়ে আসা৷” তিনি জানান, রাজকোষের ঘাটতি ২০০৯-১০ সালে ছিল ৬.২৬ শতাংশ৷ ২০১৫-১৬ সালে কমে হয়েছে ২.৬৮ শতাংশ৷ কুটির শিল্প নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ খণ্ডন করে জানান, তন্তুশ্রী ও মঞ্জুষা এখন লাভ করছে৷ রাজ্যে ৬৮ লক্ষ কর্মসংস্থানের সত্যতা নিয়ে যথাসময়ে জবাব দেবেন তিনি৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement