রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: অনিল বিশ্বাস স্মারক বক্তৃতায় প্রয়াত নেতার পরিবারকেই ব্রাত্য রাখল সিপিএম (CPM)। পার্টির ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের (SFI) ছাত্র সংগ্রাম পত্রিকার প্রতিষ্ঠা দিবসে ‘অনিল বিশ্বাস স্মারক বক্তৃতা’য় অনিলকন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে আমন্ত্রণ জানাননি উদ্যোক্তারা। পার্টির একাংশ বলছে, ব্যক্তিগত কারও নামে বা স্মরণে কোনও অনুষ্ঠান হলে সেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবারকে আমন্ত্রণ জানানোটা সামাজিক রীতি। শুধু তাই নয়, এটা ভদ্রতা-সৌজন্যও। শুধু তাই নয়, পত্রিকার প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে দীর্ঘদিন হাজির থাকা অনিলকন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে (Ajanta Biswas) কেন আমন্ত্রণ জানানো হল না, তা নিয়ে আলিমুদ্দিনের ঘরোয়া আলোচনায় বুধবার প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক প্রভাবশালী সদস্যও।
এসএফআইয়ের তরফে অবশ্য যুক্তি, যেহেতু এই অনুষ্ঠানে অবাধ প্রবেশাধিকার ছিল তাই আলাদা করে কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এসএফআইয়ের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির মুখপত্র ‘ছাত্র সংগ্রাম’ তৈরি করেছিলেন সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক প্রয়াত অনিল বিশ্বাসই (Anil Biswas)। এবার ১৫ জুন ছিল পত্রিকার ৫৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। অনিল বিশ্বাস প্রয়াত হওয়ার পর প্রতি বছর এই দিনে তাঁর নামে স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করে এসএফআই। বুধবার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় জ্ঞান মঞ্চে। ছিলেন সিপিএম নেতা নীলোৎপল বসু, সুজন চক্রবর্তী ছাড়াও এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, চিত্রপরিচালক অনীক দত্ত।
অনিলকন্যা অজন্তাকে আমন্ত্রণ জানানো বিতর্কের বিষয়টি সৃজন অবশ্য স্বীকার করেন। তাঁর কথায়, “অনুষ্ঠানে সকলের অবাধ প্রবেশাধিকার ছিল। তাই আলাদা করে আমরা অজন্তা বিশ্বাসকে আমন্ত্রণ জানাইনি।” এর আগে এই অনুষ্ঠানে প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের স্ত্রী ও কন্যা অজন্তা নিয়মিত আসতেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, গৌতম দেব, সূর্যকান্ত মিশ্ররাও ভাষণ দিয়েছেন এই স্মারক বক্তৃতায়। পার্টি সূত্রে খবর, অজন্তা পার্টির সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ না করানোর জন্যই তাঁকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাতে নিষেধ করেছে সিপিএমের প্রভাবশালী মহল। যদিও পার্টি সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ না করানোর পরও এন্টালিতে সিপিএমের রক্তদান শিবিরে এসেছিলেন অজন্তা। পার্টিতে খাতায়-কলমে নাম না রাখলেও পার্টির সঙ্গে যোগসূত্রটা রাখতে চাইছেন অনিলকন্যা, এমনটা মনে করেছিলেন অনেকে।
কিন্তু বাবার নামের স্মারক বক্তৃতায় অজন্তাকে আলিমুদ্দিনের (Alimuddin) নির্দেশে না ডাকায় পার্টির সঙ্গে অনিলকন্যার সংযোগ কার্যত ছিন্ন হয়ে গেল বলেই মনে করছে দলের একাংশ। এর আগে তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রশংসা করে নিবন্ধ লিখেছিলেন অনিলকন্যা। তারপরই অজন্তাকে সাসপেন্ড করে সিপিএম। এরপর ক্ষোভে, অপমানে পার্টির সদস্যপদই আর পুনর্নবীকরণ করাননি তিনি। সিপিএমেরই একাংশ মনে করছে, বাবার স্মারক বক্তৃতায় মেয়েকে সৌজন্য দেখিয়ে আমন্ত্রণ না জানিয়ে কার্যত বিশ্বাস পরিবারকেই অপমান করল সিপিএম, এমনই দাবি পার্টির একাংশের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.