Advertisement
Advertisement

Breaking News

Adhir Chowdhury

অধীরের ‘গোপন’ ইস্তফা জানিয়ে দিল হাইকমান্ড

কমিটি পুনর্গঠনের প্রস্তুতি শুরু এআইসিসির।

AICC gave information about the resignation of Adhir Chowdhury
Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:June 22, 2024 11:21 am
  • Updated:June 22, 2024 11:21 am  

স্টাফ রিপোর্টার: প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে গোপন বৈঠকে পরবর্তী সভাপতি পদে নতুন নাম চাইল এআইসিসি। শুক্রবার সন্ধ‌্যার বৈঠকে প্রদেশের ১০ সিনিয়র নেতার সামনে এই তথ‌্য ফাঁস করেন রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক গুলাম মীর। তার আগেই অবশ‌্য প্রদেশ সভাপতি থেকে গোটা প্রদেশ কমিটি পুনর্গঠনের প্রস্তাব পাস হয়ে গিয়েছে মৌলালি যুবকেন্দ্রে দলের বর্ধিত কার্যকরী সমিতির ঘণ্টা দুয়েকের বৈঠকে। 

জানা যাচ্ছে, এই ইস্তফা পর্ব হয়ে গিয়েছে ভোটের ফল বেরনোর পরপরই। দিল্লি গিয়ে নিজের পদে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন অধীর। পরে তা দিয়েও দেন। দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের সময়েই এই খবর নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। এআইসিসি-ও চাইছিল দলীয় সংগঠন নতুন করে সাজাতে। ফলাফল পরবর্তী অধীরের নিজের অবস্থান, দীর্ঘদিন প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব ছাড়ার ইচ্ছা, রাজ্যে দলের হার আর সভাপতির বিরুদ্ধে একটা বড় অংশের চাপা ক্ষোভের আঁচ পেয়েছিল এআইসিসিও। তারাও ভিতরে ভিতরে রাজ্যে সংগঠন পুনর্গঠনের প্রস্তুতি চালাচ্ছিল। সেই পরিস্থিতিতেই অধীরের ইস্তফা গৃহীত হয়েছে বলে খবর।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কলকাতায় ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, দাউদাউ করে জ্বলছে গার্স্টিন প্লেসের বহুতল

কিন্তু অধীর নিজে তা নিয়ে একবারও প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি। দিল্লিও জানিয়ে দেয় নতুন করে যতদিন না কাউকে খুঁজে নেওয়া হচ্ছে, অধীরই কাজ চালিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার সেই পর্বেই সংযোজন দিল্লির নেতৃত্বের সামনে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির বর্ধিত কার্যকরী সমিতির বৈঠক। এবং সেই বৈঠকেই প্রদেশ সভাপতি-সহ গোটা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি পুনর্গঠনের প্রস্তাব পাস। সেই বৈঠকেই আবেগপ্রবণ অধীর চৌধুরির বক্তব‌্য, “আমি তো অস্থায়ী সভাপতি। মল্লিকার্জুন খাড়গেজি যবে থেকে দলের সভাপতি হয়েছেন তবে থেকেই আমি অস্থায়ী। কমিটিও অস্থায়ী। খাড়গেজি বলেছিলেন কাজ চালিয়ে যাও, তাই চালিয়ে যাচ্ছি। খাড়গেজি নতুন কমিটি করে দিলে নতুন করে আবার সব তৈরি হবে।”

সন্ধ‌্যার বৈঠকের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদেশ সভাপতি খোঁজার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সেখানে সকলের সামনে কেউ কারও নাম বলতে না পারায় মীর জানান, হোয়াটসঅ‌্যাপে বা ই-মেল মারফত তাঁকে কারও পছন্দের নতুন নাম জানানো যেতে পারে। ফলে দুপুরে এআইসিসির উপর নতুন সভাপতি খোঁজার যে দায়িত্ব ন‌্যস্ত করেছিল প্রদেশ নেতৃত্ব, সন্ধ‌্যায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে তারা নিজেরাই সরে এসে প্রদেশ নেতৃত্বের কাছেই সভাপতি পদে নতুন নাম চাইল।

[আরও পড়ুন: শিয়ালদহ উড়ালপুলে খসে পড়ছে পলেস্তারা! পুজোর আগেই সংস্কার চায় পুরসভা

এদিন সকালের বৈঠকে দলের একমাত্র জয়ী সাংসদ ইশা খান চৌধুরিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ইশাকে দলের সংগঠনের স্বার্থে রাজ‌্যজুড়ে ঘুরে বেড়ানোর পরামর্শ দেন অধীর। প্রসঙ্গত, অধীরের বিরুদ্ধেই এতদিন অভিযোগ উঠেছিল, তিনি প্রদেশ কংগ্রেসকে সময় দেন না। এদিনের সভাতেও বক্তাদের তরফে প্রস্তাব ওঠে, নতুন সভাপতি যিনিই হোন, তাঁকে ২৪ ঘণ্টা প্রদেশ কংগ্রেসে সময় দিতে হবে। জনা ২৫ বক্তার বক্তব‌্য শেষে কথা বলতে ওঠেন প্রদেশ সভাপতি। সরাসরি ইস্তফার কথা প্রকাশ না করলেও তাঁর গোটা বক্তব্যেই ছিল বিদায়েরই সুর। হারের দায়ও অধীর নিজের কাঁধে নেন। বলেন, “আমি চেষ্টা করেছি। কিন্তু এ রাজ্যে এবারের ভোট সরাসরি বিজেপি আর তৃণমূলে ভাগ হয়েছিল। আমার পক্ষে যতটা করা সম্ভব আমি করেছি।” দলের প্রতি তাঁর আনুগত‌্য বোঝাতে গিয়ে এক সময় যে তিনি দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী দিয়ে তাঁকে জিতিয়ে আনেন, সে কথাও স্বীকার করেন অধীর।

উল্লেখ‌্য, দলের প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকারকে তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে জিতিয়েছিলেন অধীর। কংগ্রেসের সংগঠনে যে বড়সড় ধস নেমেছে তাও স্বীকার করে নেন বিদায়ী সভাপতি। বাম-কংগ্রেস জোট যে কাজে দেয়নি বৈঠকে সে কথাও জানান অনেকে। অধীরের জবাব, “এভাবে কাউকে একা দোষারোপ করা যায় না। আপনারা শুধু রাজ্যের কথা ভেবেছেন। আমায় সর্বভারতীয় প্রেক্ষিত ভাবতে হয়েছে। যে তৃণমূল কংগ্রেসকে শেষ করতে চেয়েছে, তাদের বিরোধিতা করা আমার কর্তব‌্য বলে মনে করেছি। নীতিগত আদর্শ থেকেই যা করার করেছি।” সন্ধ‌্যার বৈঠকে আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে। দলের পর্যবেক্ষককে জানানো হয়েছে, জোট হোক না হোক, কিন্তু মূল শত্রু হিসাবে বিজেপিকে চিহ্নিত করুক এআইসিসি। সে কথা মাথায় রেখে দলকে আগে থেকে প্রস্তুত করা হোক।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement