সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের শহরে সফল হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন। এবার এসএসকেএম হাসপাতালে। হাওড়ার অঞ্জনা ভৌমিকের হৃদযন্ত্র পেলেন নদিয়ার মৃন্ময় বিশ্বাস। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অস্ত্রোপচারের পর এখন রোগীকে রাখা হয়েছে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে। তাঁকে ৭২ ঘণ্টা নজরে রাখবেন চিকিৎসকরা। এদিকে অঞ্জনাদেবীর ত্বক ও কর্নিয়াও সংগ্রহ করা হয়েছে। ত্বক রাখা হয়েছে এসএসকেএমেরই স্কিন ব্যাংকে।
হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের বাড়ি অঞ্জনা ভৌমিকের। রবিবার দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর বাড়িতে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বমির সঙ্গে রক্তও বেরোচ্ছিল। অঞ্জনাদেবীর স্বামী হাতুড়ে চিকিৎসক। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, তিনিই প্রাথমিকভাবে স্ত্রীর চিকিৎসা করেন। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। শেষপর্যন্ত অঞ্জনা ভৌমিককে ভরতি করা হয় এলাকার একটি নার্সিংহোমে। কিছুটা সুস্থও হয়ে ওঠেছিলেন তিনি। রবিবারই ওই গৃহবধূকে বাড়িতে নিয়ে চলে যান পরিবারের লোকেরা। কিন্তু সোমবার সকালে ফের শারীরিক অবস্থা অবনতি ঘটে। বিকেলে যখন হাওড়ার নারায়ণা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, ততক্ষণে জ্ঞান হারিয়েছেন ওই গৃহবধূ। শরীরের অসাড় হতে শুরু করেছিল। আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা চলছিল ঠিকই। কিন্তু, চিকিৎসক বুঝতে পেরেছিলেন, ব্রেনসেল স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন অঞ্জনাদেবী। বাঁচার আর আশা নেই। কিন্তু, তখনও রোগীর শরীরের একাধিক অঙ্গ সচল ছিল। শেষপর্যন্ত ব্রেন ডেথ ঘোষণার পর, চিকিৎসকদের পরামর্শেই অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেন অঞ্জনা ভৌমিকের পরিবারের লোকেরা।
বুধবার সকালে গ্রিন করিডোর তৈরি করে হাওড়ার নারায়ণা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে থেকে অঞ্জনাদেবীর হার্ট ও একটি কিডনি নিয়ে আসা হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। রাজ্যের সেরা সরকারি হাসপাতালে শুরু হয়ে যায় হার্ট প্রতিস্থাপনের তোড়জোড়। দুপুরে চিকিৎসকরা জানান, অঞ্জনা ভৌমিকের হৃদযন্ত্র সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে নদিয়ার মৃন্ময় বিশ্বাসের শরীরের। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন মৃন্ময়ের পরিবারের লোকেরা জানা গিয়েছে, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মৃন্ময়। গত বছরের বিশ্বকর্মা পুজোর সময়ে তাঁর হৃদযন্ত্রে গুরুতর সমস্যা ধরা পড়ে। বহু হাসপাতালে ঘুরে শেষপর্যন্ত ওই যুবককে এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি করেন পরিবারের লোকেরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.