ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়ে মারা গিয়েছে৷ কঠিন হলেও বাস্তব মেনে নিয়েছেন বাবা-মা৷ তবে চিকিৎসকদের কাছে একটাই আরজি ছিল তাঁদের অন্যের দেহে বেঁচে থাকুক মেয়ে৷ তাই ব্রেনডেথের কথা ঘোষণার পর এক মুহূর্ত সময়ও নষ্ট করেননি মানিকতলার মণীষা রায়ের পরিজনেরা৷ পরিবর্তে মেয়ের অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা৷ শহরের ইএম বাইপাসের পাশের বেসরকারি হাসপাতালে চলছে কিডনি এবং লিভার দানের প্রক্রিয়া৷
শনিবারই ছিল মণীষার জন্মদিন৷ দীর্ঘদিন টানাপোড়েনের পর ওইদিনই তরুণীর সঙ্গে তাঁর প্রেমিক অভিষেকের সম্পর্ক জোড়া লাগে৷ তাই ওইদিন রাতে জয়রাইডে বেরোন দু’জনে৷ প্রথমে ভূতনাথ মন্দিরের দিকে যান তাঁরা। এরপর উল্টোডাঙা হয়ে লেক টাউন ও বাইপাসের বিভিন্ন রাস্তায় তাঁরা বাইক নিয়ে ঘুরতে থাকেন। কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। প্রচণ্ড গতিতে বাইক চালাচ্ছিলেন তরুণ। এমনকী, রাস্তায় এক জায়গায় তিনি বাইক দাঁড় করিয়ে মদ্যপানও করেন। এই তথ্য পুলিশ যাচাই করছে। অভিষেক ও মণীষা বাইক নিয়ে এরপর উল্টোডাঙা থেকে চলে যান। প্রচণ্ড গতিতে বাইপাস ধরে বেঙ্গল কেমিক্যালের কাছে আসেন। কয়েকটি গাড়িকে পাশ কাটিয়ে ও ওভারটেক করে এগিয়ে চলার সময়ই প্রচণ্ড জোরে বাইপাসের ডিভাইডারে ধাক্কা দেন। বাইকটি একদিকে ছিটকে বেরিয়ে যায়। রাস্তার উপর দু’জন দু’দিকে ছিটকে যান। হেলমেট ছিল না বলে দু’জনেরই মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত লাগে। ওই অবস্থায় কিছুক্ষণ পড়ে থাকার পর পুলিশের কাছে খবর যায়। মানিকতলা থানার পুলিশ গিয়ে দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। মাথায় গুরুতর চোট লাগার কারণে হাসপাতালে মৃত্যু হয় অভিষেকের।
প্রায় তিনদিন ইএম বাইপাসের ধারে একটি নার্সিংহোমে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিল মণীষা৷ মঙ্গলবার রাতে হার মানেন তরুণী৷ তাঁর ব্রেন ডেথ হয়েছে বলেই জানান চিকিৎসকেরা৷ এরপর তরুণীর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ দু’টি কিডনি এবং লিভার দেওয়া হবে বলেই জানান পরিজনেরা৷ শহরেরই এক সরকারি হাসপাতালে ভরতি রোগীকে দেওয়া হবে কিডনি৷ বাইপাসের ধারের নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন এক রোগী পাবেন মণীষার আরেকটি কিডনি এবং লিভার৷ গ্রহীতার খোঁজ মিললেই দেওয়া হবে হৃদযন্ত্রও৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.