ছবি: প্রতীকী।
গৌতম ব্রহ্ম: ইডেন বিল্ডিংয়ের পর বন্ধ হয়ে গেল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মেল ও ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ড। কোভিড (COVID-19) পজিটিভ হওয়া এক প্রসূতির মৃত্যুর পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ইডেন বিল্ডিং। এবার নারকেল ডাঙার এক বৃদ্ধা মৃত্যুর জেরে বন্ধ করে দেওয়া হল মেডিসিন বিভাগ।
জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধাকে শনিবার সল্টলেকের চার্নক হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল কলেজে ভরতি করা হয়। তিনি কিডনির অসুখে ভুগছিলেন, ডায়ালিসিস হয়েছিল। সোমবার রাতে ওই মহিলার মৃত্যু হয়। তিনি বরাহগরের বাসিন্দা বলে জানা যায়। তাঁর শরীরে করোনা উপসর্গ থাকায় তাঁর লালারসের নমুনা সোয়াব টেস্টের জন্য পাঠান হয়েছিল। আজ সকালে খবর মেলে রিপোর্ট পজিটিভ। তারপরই চাঞ্চল্য ছড়ায় হাসপাতালে। যদিও অন্য একটি সূত্র বলছে, চার্নক হসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীনই করোনা পজিটিভ হয়েছিলেন। নিয়মমাফিক ওই মহিলার বেলেঘাটা আইডি কিংবা টালিগঞ্জের এম আর বাঙ্গুরে নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেই তথ্য গোপন করে বরাহনগরের এক স্থানীয় তৃণমূল নেতা নিজের প্রভাব খাটিয়ে মহিলাকে মেডিক্যালে ভরতির ব্যবস্থা করেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডাক্তার নির্মল মাজি।তিনি বলেন অনেকেই তথ্য গোপন করছেন এটা অন্যায়। এতে ডাক্তারবাবুদের কাজ অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে। যদিও নির্মলবাবু জানিয়েছেন, মেডিসিন ওয়ার্ড বন্ধ হয়নি। গ্রিন বিল্ডি-এ স্থানান্তরিত হয়েছে। আজ বুধবার থেকে ইডেনে প্রসূতি বিভাগও খুলে যাবে।
মহিলার মৃত্যুর পরই তড়িঘড়ি রোগী ভরতি বন্ধ হয় মেডিসিন বিভাগে। হাসপাতলের সুপার ডাক্তার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, “মেল ওয়ার্ডের ভিতর দিয়ে ফিমেল ওয়ার্ডে যেতে হয়। তাই দুটো ওয়ার্ডই স্যানিটাইজেশন (Sanitization) ও ফিউমিলেশনের জন্য সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।” যদিও সুপার জানিয়েছেন সরকারিভাবে তারা এখনও রিপোর্টের ব্যাপারে কিছু জানতে পারেননি। তাই মৃতদেহ মর্গেই রাখা আছে। এদিকে করোনা আক্রান্ত হয়েছে শোনার পরই পরিবারের লোকজনও মৃতদেহ নেওয়ার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেছে বলে খবর। জানা গিয়েছে, মৃত ওই বৃদ্ধার ডায়ালিসিস হয়েছিল সল্টলেকের ওই বেসরকারি হাসপাতালে। উল্লেখ্য ওই হাসপাতালেই ডায়ালিসিস হওয়া এক রোগী করোনা পজিটিভ হয়েছিলেন। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে তবে কি ডায়ালিসিস ইউনিট থেকেই রোগ ওই বৃদ্ধার শরীরে সংক্রমিত হয়েছে? মেডিক্যালের সুপার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “ডায়ালিসিস ও করোনা পজিটিভ হওয়া রোগীর ওয়ার্ডে ভরতি থাকা ওই মহিলাকে মেডিক্যালে পাঠান হয়েছিল। তার জন্য এই সমস্যা হয়েছে। জানা গিয়েছে মেডিসিন ওয়ার্ডে এখন ১০-১২ জন রোগী ভরতি আছেন তাদের প্রত্যেককেই গ্রীন বিল্ডিং-এ স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সব রোগীরই সোয়াব টেস্ট হবে। কোয়ারেন্টাইনে পাঠান হচ্ছে বেশ কয়েকজন রোগী ও নার্সকে। তাদের ও সোয়াব টেস্ট হবে।”
একদিকে করোনার জেরে হাসপাতালগুলিতে বন্ধ হয়েছে অন্য রোগীদের ভিড়। অন্যদিকে করোনার চিকিৎসা করাতে গিয়ে সংক্রমিত হয়ে পড়ছেন চিকিৎসক-সহ হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীরা। ফলে জোড়া ফলায় জেরবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.