ছবি সৌজন্য: ড. দেবাশিস বিশ্বাস।
গৌতম ব্রহ্ম: এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। করোনা (Coronavirus) কালে শহর কলকাতায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া। বর্ষার জমা জলে এসব রোগ সৃষ্টিকারী মশার বাড়বাড়ন্ত নতুন কিছু নয়। তাই এই মরশুমেই এ ধরনের রোগের প্রকোপ বাড়ে। তবে এই পরিস্থিতিতে আরও বড়সড় বিপদবার্তা দিলেন কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা। দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) ত্রাস সৃষ্টিকারী এক মশার হদিশ মিলল কলকাতায়। সে দেশে পীতজ্বরের নেপথ্যে রয়েছে এডিস ভিট্টাটা (Adis Vittatae)নামে ওই মশার দাপটই। আর সেই মশারই এবার খোঁজ মিলল কলকাতায়। যা পুর স্বাস্থ্যকর্তাদের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিল।
কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে মশার লার্ভা সংগ্রহ করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেসব পুরসভার (KMC) ল্যাবরেটরিতে এনে শুরু হয় গবেষণা। আর তাতেই বিপদের আভাস পেলেন তাঁরা। মাইক্রোস্কোপের (Microscope) নিচে রেখে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মশার গলার নিচে ৬টি রুপোলি দাগ। তাতেই বোঝা যায়, মশাটি এডিস ভিট্টাটা। অর্থাৎ দক্ষিণ আফ্রিকার সেই ত্রাস ছড়ানো মশা। পতঙ্গবিদ ড. দেবাশিস বিশ্বাস এই মশাকে প্রথম চিহ্নিত করেন। তিনিই এর বৃত্তান্ত জানালেন।
কেন এত ভয়ংকর এই মশা (Mosquito)? জানা যাচ্ছে, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর অর্থাৎ সারাবছর ধরেই এরা বংশবিস্তার করে। পাথরের গর্তে জমা জলে থাকাই এদের বেশি পছন্দ। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্রায় সাড়ে চারমাস পর্যন্ত এই মশা বাঁচতে পারে। পীতজ্বর, ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া, জিকা-সহ একাধিক প্রাণঘাতী ভাইরাসের বাহক এরা। এই মশার অস্তিত্ব প্রথম টের পান পতঙ্গবিদ ড. দেবাশিস বিশ্বাস। তিনি বলেন, ”এশিয়ার যে জলবায়ু, তা এদের পক্ষে ভাল। গর্তে জমে থাকা জলেই এরা থাকে মূলত। কলকাতা তথা রাজ্যে এই প্রথম এ ধরনের মশা খুঁজে পেলাম। গবেষণা চলছে।” মানুষের রক্ত বড় পছন্দ এডিস ভিট্টাটার।
এই মুহূর্তে কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। সংলগ্ন জেলাগুলিতেও বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে বিভিন্ন জেলায় জেলায় পাঠানো হয়েছে সতর্কবার্তা। এই সপ্তাহেই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে আলোচনায় বসবেন স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা। এসবের মধ্যেই আতঙ্ক কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল এডিস ভিট্টাটার কলকাতায় উপস্থিতি। ফলে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া দমনে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.