গৌতম ব্রহ্ম: জিএসটি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের মাঝে এবার আসরে সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder) ও অমিত মিত্র। রাজ্য বিজেপি সভাপতির সুকান্ত মজুমদার রাজ্যকে জিএসটি (GST) বাবদ কেন্দ্র বেশি টাকা দিয়েছে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেছিলেন। তার উত্তর দিতে গিয়ে রাজ্যের অর্থদপ্তরের উপদেষ্টা অমিত মিত্র রাজ্য বিজেপি সভাপতির ‘অজ্ঞতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। ভারচুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে অমিত মিত্রর কটাক্ষ, ”জিএসটি নিয়ে পড়াশোনা না করে জনসমক্ষে হাস্যকর দাবি করেছেন বটানির অধ্যাপক। তা তাঁর অজ্ঞতা।” এরপর যুক্তি দিয়ে তিনি বোঝান কী কারণে বাংলার সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যের জিএসটি ক্ষতিপূরণের অঙ্কে ফারাক। একজন বঙ্গবাসী হিসেবে কেন্দ্রের কাছে বাংলার প্রাপ্য অর্থ চাওয়া নিয়ে সুকান্তবাবুরও সরব হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছিলেন, বাংলা গুজরাটের তুলনায় জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ বেশি টাকা পেয়েছে। তারপরও শাসকদলের নেতা,মন্ত্রীরা আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন। এরই পালটা দিতে হিসেবে সুকান্তবাবুর মন্তব্যের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অমিত মিত্র (Amit Mitra)। তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে জিএসটি ঘাটতি বাবদ বাংলাকে ৬৫৯১ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক পেয়েছে সাড়ে আট হাজার কোটির বেশি। সেক্ষেত্রে স্রেফ গুজরাটের তুলনা আসছে কেন? প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের অর্থদপ্তরের উপদেষ্টা। জিএসটি ঘাটতি কেন কেন্দ্রের তরফে দেওয়া হয় রাজ্যগুলিকে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন অমিত মিত্র।
অমিত মিত্র জিএসটি কাউন্সিলের (GST Council) উপদেষ্টা। তাঁর পরামর্শমতো পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। ১৪ শতাংশের কম জিএসটি আদায় হলে তবে কেন্দ্রকে দিতে হয় বাড়তি ক্ষতিপূরণ। তবে চলতি অর্থবর্ষের মাঝের ২ মাসে বাংলায় জিএসটি আদায় হয়েছে ভালই – ১৯.২৩ শতাংশ, যা ১৪ শতাংশের চেয়ে বেশ খানিকটা বেশি। এসব তথ্য না জেনে, জিএসটি সম্পর্কিত সঠিক ধারণা না নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি কেন প্রকাশ্যে হাস্যকর তথ্য তুলে ধরলেন, তা নিয়ে শ্লেষের সুর অমিত মিত্রর গলায়। তাঁর দাবি, বরং যে প্রাপ্য টাকা এখনও কেন্দ্র দিচ্ছে না, রাজ্য এবং রাজ্যবাসীর উন্নয়নের স্বার্থে সেই দাবি করুন সুকান্ত মজুমদার।
জিএসটি চালু হওয়ার পর প্রথম ৫ বছরে রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক ঘাটতি পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। এ বছরের জুলাইতে সেই মেয়াদ শেষ। তবে মাঝের ২ বছর কোভিড কালে প্রত্যেক রাজ্যেই অর্থনীতির উপর চাপ পড়েছে। ঠিকমতো জিএসটি আদায় হয়নি। তাই অমিত মিত্রর দাবি, এই ঘাটতি পূরণের মেয়াদ আরও ৫ বছর বাড়ানো হোক। মানবিক স্বার্থেই কেন্দ্র এই উদ্যোগ নিক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.