অর্ণব আইচ: জেলের মধ্যে ধরা পড়েছিল ‘সন্দেহজনক’ তেল। রিপোর্ট জানিয়ে দিল, সেই তেল আদৌ খাওয়ার যোগ্য নয়। এবার তেল সরবরাহকারী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করল কারা কর্তৃপক্ষ। এর আগে কতবার ওই ঠিকাদার জেলে ভেজাল তেল সরবরাহ করেছে, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে।
[তাপমাত্রা নামলেও এখনই শহরে আসছে না শীত]
এক মাস আগে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের ভিতর থেকে ধরা পড়ে এই ভেজাল তেল। কারা ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক ঠিকাদার ১৫ টিন সর্ষের তেল জেলে সরবরাহ করে। এর আগেও বন্দিদের পক্ষ থেকে রান্নার সময় সর্ষের তেল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল। তাই কারা কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে আসা তেলের উপর নজরদারি শুরু করে। পুজোর পরই জেলে এসেছিল ১৫ টিন সর্ষের তেল। আলিপুর জেলের কারা আধিকারিকরা সন্দেহের বশে একটি তেলের টিন থেকে তেল বের করে পরীক্ষা করেন। কিন্তু সেই তেল সর্ষের তেলের মতো দেখতেও নয়। তাতে সর্ষের তেলের গন্ধও ছিল না। প্রাথমিকভাবে কারা আধিকারিকরা বুঝতে পারেন যে, এটি সর্ষের তেল নয়। তাঁরা যাচাই করার জন্য ঠিকাদারকে ডেকে পাঠান। তার সামনেই তুলে ধরা হয় ওই তেল। সে তখনই টিনগুলি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। টিনগুলি পালটে দেবে বলে। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ সেগুলি হাতছাড়া করেনি। একটি টিন থেকে তেলের নমুনা নিয়ে পাঠানো হয় জাতীয় পরীক্ষাগারে।
পুলিশ ও কারার সূত্র জানিয়েছে, সেই তেলের রিপোর্ট সম্প্রতি পরীক্ষাগার থেকে কারা দপ্তরকে পাঠানো হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই তেল আদৌ ভোজ্য নয়। বরং কখনও কখনও এই তেল সর্ষের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ভেজাল তেল তৈরি করা হয়। সেখানে যে তেল উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি সম্পূর্ণ ভেজাল বলে অভিযোগ। একই সঙ্গে প্রশ্নও উঠেছে, যেখানে এই তেল ভোজ্য নয়, সেখানে বস্তুটি দিয়ে কীভাবে রান্না করা হত? এই ভেজাল তেল স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে দাবি জেল কর্তৃপক্ষের। এই তেল বন্দিদের পেটে গেলে তাঁদের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারত। তাই জেলের পক্ষ থেকে আলিপুর থানায় তেল সরবরাহকারী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়।
[‘অজানা গাড়ি’র ধাক্কায় শহরে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা]
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ওই ঠিকাদার আগে কলকাতার প্রত্যেকটি জেলে বস্তা সরবরাহ করত। এই বছর টেন্ডারের ভিত্তিতে তেল সরবরাহ করার বরাত পায়। আলিপুর সেন্ট্রাল জেল ছাড়াও প্রেসিডেন্সি জেল, দমদম সেন্ট্রাল জেল, দমদম ও আলিপুরের মহিলা জেলেও তেল সরবরাহ করত ওই ব্যক্তি। তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যদিও এই রিপোর্ট আসার পর কারাকর্তাদের শঙ্কা, ওই ঠিকাদার আলিপুর-সহ কলকাতার অন্যান্য জেলগুলিতে এই ধরনের ভেজাল তেল আগে কখনও সরবরাহ করেছে কি না। এই বিষয়ে তথ্য পেতে ওই ঠিকাদারকে জেরা করা হবে। সে কোথা থেকে এই ভেজাল তেল সংগ্রহ করেছিল, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.