ছবি: প্রতীকী।
স্টাফ রিপোর্টার: সরষের তেলের মধ্যেই ‘ভূত’।
সরষের তেলে (Mustard Oil) মেশানো হচ্ছে ভোজ্য তুষের তেল। কিন্তু সেই ভোজ্য তেলের রিপোর্ট হাতে আসার পর চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। ওই তুষের তেলেই অ্যাসিডের পরিমাণ এতটাই যে, তা শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। তা খাওয়ারও অযোগ্য। এবার ভেজাল সরষে ও ভোজ্য তেলের সন্ধানে বিভিন্ন বাজারজুড়ে শুরু হয়েছে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের গোয়েন্দাদের তল্লাশি।
পুলিশ জানিয়েছে, গত কয়েকমাস ধরেই মধ্য কলকাতার (Kolkata) পোস্তা, জোড়াবাগান এলাকার বিভিন্ন তেলের গোডাউনে চলছে ইবি-র গোয়েন্দাদের তল্লাশি। একাধিক গোডাউন থেকে ভেজাল সরষে ও ভোজ্য তেল উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি সরকারি পরীক্ষাগারে পাঠানোর পর রিপোর্ট এসেছে পুলিশের হাতে। এই ব্যাপারে সম্প্রতি একাধিক মামলাও দায়ের করেছে কলকাতা পুলিশের ইবি। এবার গ্রেপ্তারির প্রস্তুতি নেওয়া নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, সাধারণভাবে তেল পরীক্ষার সময় দেখা হয়, তাতে অন্যান্য তেলের ভেজাল মেশানো হয়েছে কি না। তেলে কত পরিমাণ অ্যাসিড রয়েছে, সেই ফলের উপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
সম্প্রতি গোয়েন্দাদের কাছে সরষের তেলের যে রিপোর্ট এসেছে, তাতে স্পষ্টই বলা হয়েছে যে, সরষের তেলে ভেজাল মেশানো হয়েছে তুষের তেল দিয়ে। এমনকী, কিছু ক্ষেত্রে ওই ভোজ্য তেলের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। গত বছর জুনে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছিল যে, সরষের তেলে কোনওমতেই মেশানো যাবে না অন্য কোনও ধরনের ভোজ্য তেল। সঙ্গে সঙ্গেই সেই সরষের তেল ভেজাল বলে গণ্য করা হবে। এই কারণে কয়েক মাস আগে একটি নামী সংস্থার সরষের তেল বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। একই সঙ্গে যে ধরনের ভোজ্য তেল অথবা তুষের তেল ওই সরষের তেলে মেশানো হচ্ছে, সেগুলিও পরীক্ষা করতে পাঠানো হয় পরীক্ষাগারে। সেই রিপোর্ট দেখে আরও হতবাক ইবি—র গোয়েন্দারা।
এই তেলে যে পরিমাণ আয়োডিন রয়েছে, তা ঊর্ধ্বসীমা ছুঁইছুঁই। কিন্তু এই ভোজ্য তেলে অ্যাসিডের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। পরীক্ষাগারের রিপোর্ট অনুযায়ী, যেখানে অ্যাসিডের পরিমাণ ০.৫—এর কম থাকা উচিত, সেখানে এই পরিমাণ ১.২৫। অর্থাৎ স্বাভাবিকের থেকে আড়াই গুণ বেশি। এই তেল পরিশোধিত নয়। সম্পূর্ণ অপরিশোধিত বলেই তাতে অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরাই পুলিশকে জানিয়েছেন, এই ভোজ্য তেল দিয়ে সরাসরি রান্না করলে, এমনকী সরষের তেলে মেশালেও তা মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। যেহেতু ইউক্রেনে যুদ্ধের ফলে কিছু ভোজ্য তেল আমদানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাই এই ধরনের ভেজাল তেল বাজারে আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা। কলকাতার বাজারে ভেজাল তেল বন্ধ করতে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.