স্টাফ রিপোর্টার: পানিহাটিতে সদ্য মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে দণ্ড উৎসবে। মঙ্গলবার জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা গেল। ১ জুলাই রথযাত্রা। পানিহাটির ঘটনার পর কামারহাটির এমনই একটি রথযাত্রা (Rathyatra) নিয়ে চিন্তায় পুলিশ প্রশাসন। রথতলার বেলঘরিয়া রথতলা ফ্রেন্ডস অফ সোসাইটির সেই রথযাত্রার সভাপতি কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। আজ, মদনের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠকেও বসার কথা প্রশাসনের।
রথযাত্রায় প্রায় ৩০ ফুট উচ্চতার তিনটি রথ বেরনোর কথা কামারহাটি থেকে। তিনটি রথই পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে। শুভদ্রার রথে চাকা থাকছে ১২টি। বাকি দু’টির চাকা হচ্ছে ১৬টি করে। পুজোও হবে পুরীর মন্দিরের সমস্ত নিয়ম মেনে। মন্দির তৈরির কাঠ আনা হয়েছে ওড়িশার কটক, রাউরকেল্লার গন্ধমাদন জঙ্গল, অসম আর ধৌরা থেকে। জাঁকজমকে কোনও খামতি নেই। রথযাত্রার আয়োজক কামারহাটির ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর বাবু মণ্ডল। তাঁরই উৎসব কমিটির সভাপতি মদন। মদনকে এ নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তাতেই পাওয়া গেল মঙ্গলবার। বললেন, “বাবু এত বড় রথ করছে। স্নানযাত্রায় এত মানুষ এলেন। রথে কী হবে জানি না। পুলিশ অনুমতি দেয় কিনা দেখা যাক।”
রথ কামারহাটি থেকে বেরিয়ে বিটি রোড ধরে যাওয়ার কথা বারাকপুরের দিকে। আবার ফিরবে সেই পথেই। এতেই বিপদ আঁচ করেছে পুলিশ। ৩৫ ফুট চওড়া রাস্তায় এমন তিনটি রথের পাশাপাশি অন্যতম আকর্ষণ মদন মিত্র নিজে। তা ছাড়া রাস্তা যতই চড়াও হোক, তার পুরো অংশটা তো আর ব্যবহার করা যায় না। প্রশাসনের ধারণা, রথের দিন যে পথে রথ যাবে, সেই পথে একেক জায়গায় ৪০ হাজার লোকের সমাগম হতে পারে। পানিহাটির উৎসবের বিপদ হয়েছিল ভিড়ের চাপেই বলে প্রাথমিক তদন্তে পেয়েছে পুলিশ। তার পর এই ধরনের কোনও বিশেষ উৎসবকে কেন্দ্র করে সেই একই পরিস্থিতি হোক এমনটা চায় না কোনও পক্ষই। সেই কারণেই বাড়তি সতর্কতা। রথযাত্রা নিয়ে আকর্ষণ দীর্ঘদিনের। মদনের তা নিয়ে সংযোজন, “মানুষ একটু রথের রশি টানতে চান। রথের কাছে ক’জন পৌঁছতে পারবেন জানি না। তবে রশি অনেক লম্বা করা হচ্ছে। যাতে বহু মানুষ অন্তত সেটুকু ছুঁতে পারেন।”
এই রথযাত্রায় মদন মিত্রের থাকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মদনও বিলক্ষণ তা জানেন। নির্দল কাউন্সিলরদের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে বলে সতর্ক করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কিন্তু এই পুজোর প্রধান বাবু নির্দল কাউন্সিলর। যাঁকে দলের টিকিট না দিতে পেরে দমদমের সাংসদ সৌগত রায়ের উদ্দেশে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মদন। পরে তাঁকে সতর্কও করা হয়। এদিন সে প্রসঙ্গে মদনের বক্তব্য, “বাবু যদি উৎসব কমিটিতে আমায় সভাপতি করে দেয় আমার কী করার আছে? এত মানুষ আসেন। এত বড় রথযাত্রা। সেখানে আমি না বলি কী করে?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.