রিংকি দাস ভট্টাচার্য: বিশ্বকর্মা পুজোর ঢাকের কাঠি পড়তেই কড়া নাড়তে শুরু করেছে শারদোৎসব। পটুয়া পাড়ায় তুমুল ব্যস্ততা। রাস্তায় নেমে পড়েছে শপিং-ফ্রিক বাঙালি। কিন্তু লাখ টাকার প্রশ্ন, পুজোর আকাশ কেমন থাকবে? বর্ষাসুর গত বছরের মতো এবারও কি লম্বা ইনিংস খেলবে বর্ষাসুর ? না কি রোদ ঝলমলে শরতের আবহে হবে দেবীর আবাহন?
আশঙ্কার মেঘ জমতে শুরু করেছে বাঙালি মনেও। এ বছর দুর্গাপুজো শুরু হচ্ছে আগামী ১৬ অক্টোবর। ওই দিন ষষ্ঠী। দশমী পড়েছে ২০ অক্টোবর। এই সময়ে ঝেঁপে বৃষ্টি যে হবে না, সে কথা বুক ঠুকে বলতে পারছে না আবহাওয়া দপ্তর। কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে এ রাজ্য থেকে বর্ষা বিদায় নেয় ১০ অক্টোবর। কিন্তু গত কয়েক বছর যাবৎ বর্ষার খামখেয়ালি মনোভাবের দরুন সময়টা এগিয়ে-পিছিয়ে যাচ্ছে। প্রায়ই দেখা যাচ্ছে নিম্নচাপের দৌলতে বিদায় লগ্নেও আচমকা বর্ষা চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। এবারেও কি তা-ই হবে?
[ট্রেনের ছাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মানসিক ভারসাম্যহীন, ব্যস্ত সময়ে ব্যাহত ট্রেন চলাচল]
ক্যালেন্ডারের মোতাবেক বর্ষা বিদায়ের সময় ১০ অক্টোবর হলেও সে ক্যালেন্ডার তৈরি হয়েছিল প্রায় ৪০ বছর আগে। কিন্তু তার মধ্যে কলকাতায় বদলে গিয়েছে পুজোর আবহ। বদলে গিয়েছে পুজোর সময়ের পরিবেশ। দেরি করে বর্ষা আসছে। থাকছে বেশি দিন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আগে বর্ষার বেশিটাই হয়ে যেত আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে। ভাদ্রের মাঝামাঝি কাটিয়ে বাংলা থেকে বিদায় নিত বর্ষা। কিন্তু নতুন পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে, বর্ষা পিছিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। একই সঙ্গে হয়েছে দীর্ঘায়তও। গত এক দশক ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আবহাওয়াবিদরা দেখেছেন, বর্ষা থেকে যাচ্ছে অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। গোটা দেশেই বর্ষাj বিলম্বিত লয়। চলতি বছর পুজো অক্টোবরের হওয়ায় শরতের রোদ মেঘে ঢেকে যাওয়ার সম্ভাবনা বিলক্ষণ থাকছে৷
[শহরে ফের অঙ্গ প্রতিস্থাপন, গৃহবধূর লিভার বসল শিক্ষকের শরীরে]
আর তাঁদের আশঙ্কাকে জোরদার করছে গত কয়েক বছরে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ঘটে যাওয়া কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগের তালিকা। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর বর্ষা যখন বিদায় নিচ্ছে, তখনই হঠাৎ মূর্তিমান অসুরের মতো হাজির হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘ফাইলিন’। ওড়িশাকে তছনছ করে দিয়েছিল সেই ঘূর্ণিঝড়। তার প্রভাব পড়েছিল এ রাজ্যেও। পুজোর আনন্দ মাটি হয়ে গিয়েছিল। ‘দায়ে’র মতো ফাইলিনও ওড়িশার গোপালপুরে আছড়ে পড়ে। অতি প্রবল সেই ঘূর্ণিঝড়ের এক বছরের মাথায়, ২০১৪-র ঠিক একই সময়ে বিশাখাপত্তনম ও শ্রীকাকুলামের মাঝামাঝি জায়গায় আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’। ফাইলিনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১৫ কিলোমিটার। আর ঘুর্ণিঝড় হুদহুদ হাজির হয়েছিল ১৯৫ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে। তার জেরেই এই দু’বছর ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয় ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলে। এ বার তেমন কোনও বিপত্তি যে হবে না, পুজোর তিন সপ্তাহ আগে দাঁড়িয়ে তা হলফ করে বলতে পারছে না আলিপুর৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.